পরোজপুরের কাউখালীর একটি টার্কি মুরগি ও হাঁসের খামার বেকার তরুণ ও যুবকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। কম খরচে লাভজনক ওই খামার দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকেই। প্রতিদিন খামার দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় করছে অনেকে। ব্যতিক্রমী এই খামারের উদ্যোক্তা কাউখালী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদ মিলটন। সামাজিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কাউখালীর মুক্তারকাঠী গ্রামে তিনি গড়ে তুলেছেন টার্কি মুরগি,গরুও হাঁসের খামার।
দ্দরুটা শখের বশে হলেও এখন তিনি এখন পূর্ণ মনোযোগ ডুবে গেছেন খামারে। উপজেলায় চেয়ারম্যান মিলটন গড়ে তুলেছেন প্রথম টার্কি খামার। প্রথম বছরেই এ খামারে এসেছে সফলতা। লাভের মুখ দেখেছেন টার্কি খামারের উদ্যোক্তা মিলটন।টার্কি মুরগির দিনে দিনে চাহিদা বাড়ায় টার্কি খামারের সফলতাকে কাজে লাগিয়ে এর সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মিলটনের ছোট স্বপ্ন বড় হচ্ছে। এখন বাণিজ্যিকভাবে টার্কির খামার করার পরিকল্পনা করছেন ।কাউখালী সদর ইউনিয়ন পরিষদে দু’বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদ মিলটন।ছিলেন কাউখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। এখন দিনরাত তার ব্যস্ততা। রবিবার গ্রাম্য আদালতে সালিস। নিজের ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে ও ঘোষণা করে এখন লড়ছেন মাদকের বিরুদ্ধে।কাউখালী সদর ইউনিয়নসহ ৫টি ইউনিয়নে ছুটে চললেও তার প্রতিদিনের কর্মতালিকায় যোগ হয়েছে খামার দেখভালের সময়। খামারের অনেক কাজ তিনি করেন নিজ হাতে। কাজ পাগল হিসেবে পরিচিত এই তরুণ চেয়ারম্যানের টার্কি খামার এখন অনেকের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে।

অবশ্য এর আগে বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে শত শত তালগাছ ও বীজ রোপণের পাশাপাশি উপজেলা সদরে সড়ক হাট বাজার গুলোতে বসানো হয়েছে সৌর বাতি। মিলটনের বেশকিছু ব্যতিক্রম উদ্যোগ সব মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। গাছ লাগাতেও উদ্যোগী হয়েছেন অনেকেই।এ প্রসঙ্গে আমিনুর রশীদ মিলটনবলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অনেক কাজ করতে হয়। বেকাররা এখন ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। টার্কি খামার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথমে তিনি বিভিন্ন খামারে গিয়ে টার্কি মুরগি সম্পর্কে জানতে পারেন। পরে কৌতূহলী হয়ে ঢাকা থেকে টার্কি মুরগি কিনে এনে মুক্তারকাঠীতে ছয় একর জমিতে প্রথমে তৈরি করেন খামার করেন। এর আগে তৈরি করেন হাঁনের খামার পাশাপাশি সাত মাস আগে তিনি টার্কি মুরগির খামাওে আনেন। সাত মাস পর টার্কি মুরগি ডিম দেয়া শুরু করেছে। তার খামারে ১২০টি বড় টার্কি এবং ৮৫টির মত বাচ্চা টার্কি মুরগি রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫টি ডিম পাড়ে। মিলটন বলেন, বিভিন্নভাবে খোঁজ-খবর করে তিনি জানতে পারেন টার্কি মাংসের সুখ্যাতি বিশ্বজুড়ে। টার্কি বড় আকারের গৃহপালিত পাখি। ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে ওঠার ছয় মাসের মধ্যে টার্কি ডিম দেয়। ছয় মাসের মেয়ে টার্কির ওজন হয় পাঁচ থেকে ছয় কেজি। আর পুরুষগুলো প্রায় আট কেজি। নতুন খামারি মিলটন বলেন, উৎপাদন খরচ তুলনামূলক অনেক কম। তাই এর পালন বেশ লাভজনক। তিনি এখন টার্কি মুরগির এক জোড়া ডিম তিন’শত টাকা এবং বাচ্চার জোড়া ১৬’শত টাকা করে বিক্রি করেন। তিনি বলেন টার্কির প্রধান খাবার ঘাস। তবে কচুরিপানা, বাঁধাকপি এবং দানাদার খাবারও খেয়ে থাকে এরা। এখন অনেকেই আগ্রহ নিয়ে তার কাছে আসেন টার্কি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতে।মিলটন আরো বলেন তার খামারে গরু ও হাসঁ পালন করে বেশ লাভজনক অবস্থানে আছেন। প্রায় ৭শতাধিক হাঁস রয়েছে তার খামারে। প্রতিদিন ৪’শত থেকে সাড়ে চারশত ডিম আসে। টার্কি খামারের এ সফলতায় স্থানীয় অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। খামার গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা। শখের বসে শুরু হওয়া টার্কি পালন এখন বাণিজ্যিক আকার ধারণ করছে। খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় মানুষের।