২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকগুলোতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৫ হাজার ৯৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য দেন অর্থমন্ত্রী।
ব্যাংকিংখাতে খেলাপি ঋণ আদায়ে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকার খেলাপি গ্রাহক শনাক্তকরণ এবং তাদেরকে আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। এ লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ প্রণয়ন করেছে।এ আইনের আওতায় খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে খেলাপি গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।খেলাপি ঋণ আদায়ের গুরুত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, প্রতি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে শ্রেণীকৃত ঋণ স্থিতি, শ্রেণীকৃত ঋণের বিপরীতে আদায় পরিস্থিতি, ঋণ অবলোপন, প্রভিশন সংরক্ষণ ও নতুন ঋণ আদায় বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন ব্যাংকের বোর্ড সভায় উপস্থাপন করতে হবে। ঋণ আদায় ইউনিটকে শক্তিশালী করতে হবে। পাশাপাশি মাঠ এবং শাখা পর্যায়ে ঋণ আদায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিতে হবে।এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পুরষ্কার বা ইনসেনটিভ প্রদান করতে হবে; ব্যর্থতায় যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।তিনি জানান, খেলাপি ঋণ আদায়ে শ্রেণীকৃত ও অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে দায়েরকৃত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে এবং মামলাগুলোর যথাযথভাবে পারস্যু করতে হবে। সরকার কর্তৃক প্রণীত বিভিন্ন আইনের পাশাপাশি উপযুক্ত নির্দেশনাসমূহ খেলাপি ঋণ আদায়ে কার্যকর ভূমিকা রাখবে আশা করা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ব্যাংকিং সেক্টরে সকল প্রকার প্রযুক্তি বিভ্রাটমুক্ত রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক তথা সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট রয়েছে।দেশের আন্তঃব্যাংকিং লেনদেন পদ্ধতি আধুনিকায়নে বর্তমান সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মধ্যে দেশে অটোমেটেড চেক ক্লিয়ারিং ব্যবস্থা বাস্তবায়ন অন্যতম।তিনি জানান, অটোমেটেড ক্লিয়ারিং ব্যবস্থার পাশাপাশি দেশে কার্ড ভিত্তিক লেনদেন সম্প্রসারণের জন্য ২০১২ সাল থেকে দেশে চালু করাহয়েছে ন্যাশনাল পেমেন্ট স্যুইচ বাংলাদেশ বা এনপিএসবি। এ ব্যবস্থার আওতায় আন্তঃব্যাংক বিভিন্ন লেনদেনগুলো সম্পাদিত হচ্ছে যার মাধ্যমে গ্রাহক তাৎক্ষণিকভাবে লেনদেন করতে সক্ষম। এছাড়া ছোট অংকের আর্থিক লেনদেন সম্পাদনের জন্য চালু করা হয়েছে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বা মোবাইল ব্যাংকিং, যা তাৎক্ষণিকভাবে লেনদেন করতে সক্ষম।