বাল্য বিবাহ মুক্ত লালমনিরহাটে বাল্য বিয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে নওশাদ আলী বাবু নামে এক ব্যবসায়ী। বুধবার সকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ এলাকার ভারালদা বাজারে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী নওশাদ আলী বাবু বাদী হয়ে নাবালিকা কনের বাবা সাইফুল ইসলামসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
প্রাপ্ত অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ এলাকার ভারালদা বাজারে সংলগ্ন মোঃ সাইফুল ইসলাম তার নাবালিকা মেয়ে বিয়ের আয়োজন করে। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী নওশাদ আলী বাবু বাল্য বিয়ের প্রতিবাদ জানিয়ে কুলাঘাট ইউনিয়নের কাজী হায়দার আলীর সহকারী কাজী মোক্তার আলীকে এই বিয়ে না পড়ানোর অনুরোধ করেন। কাজী মোক্তার আলী এই বিয়ে পড়াবেন না বলে তাকে প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে লুকিয়ে তিনি এই বিয়ে রেজিষ্ট্রি করেন। শুধু তাই নয়, কাজী হায়দার আলীর সহকারী কাজী মোক্তার আলীর বিরুদ্ধে কুলাঘাট ইউনিয়নের অসংখ্য বাল্যবিয়ে রেজিষ্ট্রারী করার অভিযোগ রয়েছে।
ব্যবসায়ী নওশাদ আলী বিষয়টি মোগলহাট ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিবকে জানিয়ে ফেরার পথে কনের বাবা সাইফুল ইসলাম তার পথরোধ করে মোটরসাইকেল থেকে মাটিতে ফেলে ৪/৫ জন মিলে বেধরক মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এ সময় তার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী নওশাদ আলীকে আবারও হত্যার হুমকী দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় ( ৩১ মার্চ) শনিবার সদর থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযুক্তরা হল, মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ এলাকার ভারালদা বাজারের মৃত আজিজুলের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম, একই এলাকার আমিনুলের ছেলে মোঃ শামীম ও সাইফুল ইসলামের স্ত্রী সুফু বেগম। স্থানীয় সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী নওশাদ আলী বাবু বলেন, আমি অভিযোগ দেয়ার পর পরেই সদর থানার উপ-পরির্দশক (এসআই) গোলাম মোস্তফা ঘটনাস্থলে তদন্তে জন্য আসেন এবং তদন্ত করে যান।
এ ব্যাপারে কুলাঘাট ইউনিয়নের কাজী হায়দার আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাল্যবিয়ের কথা অস্বীকার করে জানান মোক্তার আলী বিয়ের দাওয়াত খেতে গিয়েছিলেন, বিয়ে রেজিষ্ট্রারী করার জন্য নয়। মোগলহাট ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, বিষয়টি কনে পক্ষের কাছে শুনেছি। তারা মোগলহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা হলেও রহস্যজনক ভাবে ঢাকা সিটি করর্পোরেশন মেয়রের স্বাক্ষরিত একটি জম্ম সনদ দেখান। লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।