গার্মেন্টস কর্মী স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার তিন বছর পর ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করেছে জয়দেবপুর থানার পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ওই যুবক মোঃ ইসমাইল হোসেন (২৮) জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কালাকন্ত এলাকার মস্তুর হোসেনের ছেলে। নিহত শাহিনুর আক্তার শারমিন (১৮) কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারি থানার ডাংগুয়াপাড়া গ্রামের আবু বকর ছিদ্দিকের মেয়ে। রবিবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা মোড় এলাকা থেকে তাকে ফাঁদ পেতে গ্রেফতার করা হয়।

জয়দেবপুর থানার ওসি মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, ইসমাইল হোসেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ি জরুন এলাকায় মন্ডল গ্রুপের আয়রনম্যান হিসেবে চাকরি করতো। একই কারখানায় হেলপার হিসেবে চাকরি করতো শাহিনুর আক্তার শারমিন। একই কারখানায় চাকরির সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তারা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সালনা এলাকায় স্থানীয় একটি কাজী অফিসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে তারা বেশ কিছু দিন আলাদা থাকতো। এক পর্যায়ে শারমিন বিয়ের বিষয়টি পারিবারিকভাবে জানানোর জন্য ইসমাইলকে চাপ দেয়। এদিকে ইসমাইল পারিবারিক কারণে বিয়ের বিষয়টি তার পরিবারে জানাচ্ছিলনা। পরে ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ তারা গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকার শিরিরচালা আজমত আলীর বাড়িতে বাসা ভাড়া নেয়। ১৬ মার্চ দিবাগত রাতে সে স্ত্রী শারমিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় হোতাপাড়া পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ের নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে ১৮ মার্চ খবর পেয়ে শারমিনের স্বজনরা হাসপাতালের মর্গে এসে মরদেহ সনাক্ত করে। এ ঘটনায় ১৯ মার্চ নিহতের চাচাতো ভাই শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন।

হত্যাকান্ডের পর ইসমাইল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে হাটুভাঙ্গা এলাকায় পালিয়ে গিয়ে সেখানে সাউথ টেক্সটাইল মিলে আয়রনম্যান হিসেবে চাকরি নেয় এবং দুই বছর আগে সে বিয়ে করে।

ওসি আরো জানান, ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল এ মামলাটি চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে মনিটরিং সেলে স্থানান্তরিত হয়। চারজন তদন্তকারী কর্মকর্তা এ মামলার তদন্ত করেন। সর্বশেষ জয়দেবপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর মোঃ শওকত আলী এক বছর ধরে মামলাটির তদন্তকালে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও ফাঁদ ফেতে আসামি ইসমাইল হোসেনকে গ্রেফতার করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে।