দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের এখনো অনুমতি পায়নি বিএনপি।যদিও দলটির দাবি, সমাবেশ সফল করতে সব ধরণের প্রস্তুতি শেষ করেছে তারা।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাতের মধ্যে সমাবেশের অনুমতি দিবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি নয় আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিদেশিদের কাছে দেন-দরবার করছে।
দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ১২ মার্চ সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। এই সমাবেশের অনুমতির জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আবেদনও করেছে তারা।তবে বিকেল পর্যন্ত বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। দলের পক্ষ থেকে এমনটা জানানো হয়।রিজভী দাবি করেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা একটি দলের গণতান্ত্রিক অধিকার।
জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কাসপার্টিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুমতি দেয়া হচ্ছে অথচ বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না -এজন্য সরকারের সমালোচনাও করেন তিনি।রিজভী আরো অভিযোগ করেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে আবারো ভোটারবিহীন নির্বাচন করার নীল নকশা করছেÑ এ জন্য বিদেশিদের কাছে ধরণা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিএনপি সোমবার এই জনসভা করতে চাইলেও রোববার দুপুর পর্যন্ত পুলিশের অনুমতি পায়নি।সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, সরকারকে বলব, এখনও সময়্ আছে, আপনাদের মনে শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। আমাদেরকে অনুমতিটা দিন, আমরা জনসভাটা করি।এর আগেও বিভিন্ন সময় বিএনপিকে শেষ মুহূর্তে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এবার সেরকম ঘটলেও জনসভা আয়োজনের প্রস্তুতি নিজেদের রয়েছে বলে রিজভী জানান।
তিনি বলেন, অতীতেও দেখেছি রাত ৮টা/৯টায় অনুমতি দিয়েছে। আমরা সেটা দেখব। আজকে রাতের মধ্যে যখনই অনুমতি দেওয়া হোক, আমরা আগামীকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা সফল করতে সক্ষম হব।সকালে আবুল খায়ের ভুঁইয়ার নেতৃত্বে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। তবে ইতিবাচক কোনো জবাব পাননি। দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই জনসভার কর্মসূচি ঠিক করে গত ২ মার্চ ঢাকা মহানগর পুলিশ ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের কাছে অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয় বিএনপি।রিজভী বলেন, পুলিশ কেন অনুমতি দেবে না। কালকে তো খুলনায় জনসভা হয়েছে। ওখানে কি কোনো গোলমাল হয়েছে, কোনো সন্ত্রাসী কর্মকা- হয়েছে? তাহলে দেবে না কেন?রাশেদ খান মেননের কয়টা লোক আছে, এরশাদের কয়টা লোক আছে। তারপরও তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি পায়। তাহলে বিএনপি পাবে না কেন?
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মালিকানা কি আওয়ামী মহাজোটের- এই প্রশ্ন রেখে বিএনপি নেতা বলেন, দেশকে তারা পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে বলেই তারা এই ধরনের আচরণ করছে।
বিএনপিকে জনসভা করতে না দেওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণের প্রকাশ ঘটছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী।তারা গণতন্ত্রকে গলা টিপে ধরছেন, এই কারণেই যে যতই জনগণ জনসভায় আসবে, ততই তাদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হচ্ছে।খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায়ে দেরির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে রিজভী বলেন, আমাদের এখন কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। যেহেতু হাই কোর্ট বলেছেন এটা আগামীকাল হবে। আমরা দেখি, তারপর জানাব।সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল আউয়াল খান, আবেদ রাজা, আমিনুল ইসলাম।