জমি দখলে বাঁধা দিতে গিয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে পঞ্চাশর্ধ মা সহিতন বেগম ও ছেলে রশিদুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের ফকিরটারী গ্রামে। এ ব্যাপারে সহিতন বেগম বাদী হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় ওইদিন রাতেই ৫জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।  প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, সহিতন বেগম তার স্বামীর বাপ দাদার পৈত্রিক সাড়ে ১৫ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন থেকে ভোগ দখল করে আসছেন। চলতি মৌসুমেও তারা সেই জমিতে উ”চ ফলনশীল ইরি ধানের আবাদ করেন। পাশ^বর্তী ইয়াকুব আলী, ইউনুছ আলী ও হাসান আলী গং গত ৮ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের সেই উ”চ ফলনশীল আবাদি ধান ক্ষেতের আইল কেটে জমি দখল নিতে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে সহিতন বেগম তাদের বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইয়াকুব আলী ও তার সঙ্গিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বেদম মারপিট করে। এতে তার ডান হতের দুইটি আঙ্গুর কেটে যায়। এ সময় সহিতন বেগমের চিৎকারে তার স্বামী দবিয়ার হোসেন ও ছেলে রশিদুল তাকে উদ্ধার করতে এলে প্রতিপক্ষ ইয়াকুব আলী গং তাদেরকেও মাটিতে ফেলে বেদম মারপিট করে। পরবর্তীতে বাব-মা ও ভাইকে বাচাতে বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম সেখানে গেলে তাকেও তারা মারপিট করে। এক পর্যায়ে বাবা-মা ও দুই ছেলেকে মারতে মারতে অজ্ঞান করে ফেলে। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের চিৎকারে সেখানে গিয়ে তাদের সবাইকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসায় স্বামী দবিয়ার ও বড় ছেলে শহিদুল সুস্ত হলেও বর্তমানে হাসপাতালের ৩য় তলায় ৩৫ ও ৫৪ নং বেডে সহিতন ও ছোট ছেলে রশিদুল মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ওইদিন রাতেই সহিতন বেগম বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে লালমনিরহাট সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে বড় ছেলে শহিদুল সাংবাদিকদের জানান, ইয়াকুব আলী, ইউনুছ আলী ও হাসান আলী গং দীর্ঘদিন থেকে তাদের ওই পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে আসছে। এর আগেও একবার জমি দখল করতে গেলে আমার চাচা আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যে মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। অভিযুক্ত হাসানের ভাই হাবিব ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, সম্পুর্ন ঘটনাই পরিকল্পিত। তারাই তার বাবা, ভাই ও মাকে মেরেছে। তার বাবা ও ভাই হাসপাতালে ভর্তি আছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জহুরুল হক জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। আরও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ আলম জানান, এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ পেয়েছি । তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।