সব কিছু ঠিক থাকলে কাল রোববার বসানোর কথা রয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর তৃতীয় স্প্যান। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হবে এ স্প্যান। এতে ৬ দশমিক এক পাঁচ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর মধ্যে প্রথমবারের মতো দৃশ্যমান হবে প্রায় অর্ধ কিলোমিটারের সেতু। মাওয়া ইয়ার্ডে এভাবে প্রস্তুত করে রাখা আছে পদ্মা সেতুর স্প্যান। চীন থেকে নিয়ে আসা ছোট টুকরোগুলোকে জোড়া দিয়ে তৈরি করা হয় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ স্প্যান। প্রাথমিকভাবে পদ্মা সেতুর রং হওয়ার কথা ছিলো সোনালি, তাই ইয়ার্ডে রাখা স্প্যানগুলোও এ রংয়ের। তবে এগুলোর মধ্যে যেটি তৃতীয় স্প্যান হিসেবে বসানো হচ্ছে, সেটিকে ইয়ার্ডেই ধূসর রং করে নেয়া হয়।
ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকেই স্প্যানটি ইয়ার্ড থেকে বের করে রাখা হয় ক্রেনে তুলতে। তবে সব প্রস্তুতি শেষ করতে আরো কয়েকদিন সময়ের প্রয়োজন ছিলো, তাই মাওয়া থেকে এটি নির্ধারিত পিলারের কাছে নিয়ে যাওয়া শুরু হয় শুক্রবার। ৩২শ টন ওজনের স্প্যানটি নিয়ে যেতে ব্যবহার করা হয়েছে ৩৬শ টন ওজন বহনে সক্ষম ভাসমান ক্রেন।
প্রথম স্প্যানটি বসানো হয় গত বছরের ৩০শে অক্টোবর। এরপর দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানো হয় প্রায় ৪ মাস পর, এ বছরের ২৮ জানুয়ারি। সে তুলনায় তৃতীয় স্প্যান বসাতে সময় লাগছে মাত্র দেড় মাস। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে আগের দুটি স্প্যানের সঙ্গে জোড়া দিয়ে এটি বসানো হবে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমাদের স্প্যানের রঙ থেকে শুরু করে সবকিছুই তৈরি। আমারা যেখান থেকে জোড়াটা দেই, সেটা অনেক উপরে। আমরা কাজ করলেই হয় না, ইঞ্জিনিয়ারের সেটা দেখতেও হয়।’ এ স্প্যান বসানোর পর জাজিরা প্রান্তের ৪টি পিলারে সেতু দৃশ্যমান হবে ৪৫০ মিটার। তবে মাওয়া প্রান্তে একটি পিলারও দৃশ্যমান করা সম্ভব হয় নি। বর্ষার তীব্র স্রোতে এ প্রান্তে কাজ করা কঠিন বলে এখন শুকনো মৌসুমে বাড়ানো হয়েছে কাজের গতি।
তিনি আরো বলেন, ‘জটিলতা আসছে, সেটা মোকাবেলা করেই সামনে এগোতে হবে। আর আমরা সবসময় আশাবাদী। তবে কোনটা আমরা আগে করেছি, কোনটা পরে। এটা প্রতিনিয়তই হচ্ছে।’ প্রকৌশলগত জটিলতা না থাকলে রোববার সকালে তৃতীয় স্প্যানটি পিলারের ওপর বসানোর কথা রয়েছে । তবে দ্বিতীয় স্প্যান বসাতে একদিন সময় বাড়তি সময় লেগেছিলো বলে এক্ষেত্রেও তেমন সমস্যা হলে সেটি পরের দিন বসানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।