শ্লীলতাহানির ভিডিও চিত্র সেলফোনে ধারণ করে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে নিয়মিত ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর মা প্রতিবেশি যুবক কার্তিক সুত্রধরকে (৩০) অভিযুক্ত করে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ এবং স্থানীয় প্রধানবর্গের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত কার্তিক ভাঙ্গুড়া পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ মেন্দা পালপাড়া মহল্লার প্রভাবশালী শ্রী চৈতন্য সুত্রধরের ছেলে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে একদিন বিকালে কার্তিক ওই স্কুলছাত্রীর বাড়িতে বেড়াতে যায়। ওই সময় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সে কৌশলে মেয়েটিকে শ্লীলতহানি করে। সে সময় শ্লীলতাহানির ভিডিও সেলফোনে ধারণও করে কার্তিক। তারপর থেকে ওই ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কার্তিক নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকে তাকে মেয়েটিকে।

স্কুলছাত্রী জানায়, কার্তিক ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করেছে। এক পর্যায়ে সে এ ঘটনা সবাইকে বলে দিতে চাইলে কার্তিক তাকে এসএসসি পরীক্ষা শেষে বিয়ে করবে বলে কথা দেয়। এ ভাবে উভয়ের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক নিয়মিত চলতে থাকে। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে কার্তিক আত্মগোপন করে। এতে নিরুপায় হয়ে ওই ছাত্রী ঘটনাটি তার পরিবারকে জানায়। ক্রমেই ঘটনাটি লোক সমাজে জানাজানি হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে গত তিন দিন ধরে স্থানীয় কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান শ্রী মহাদেব, শ্রী কৃঞ্চ, সুভাষ সরকার সহ অন্যন্য প্রধানবর্গ দফায় দফায় সালিশ বৈঠক করেন। সালিশ বৈঠকে উভয়ের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি প্রমাণিত হলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান শ্রী মহাদেব, শ্রী কৃঞ্চ ও সুভাষ সরকার অভিযুক্তের পক্ষ নেয়ায় কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় সালিশ কার্যক্রম।

ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর পরিবার জানায়, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে বিষয়টি জানাজানি হলে কার্তিকের পরিবার আমাদের পরিবারকে মামলা না করার জন্য হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বর্তমানে নির্যাতিতার পরিবারটি অভিযুক্তের পরিবার এবং এলাকার প্রধানবর্গের চাপে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এ ব্যাপারে পৌর কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ জানান, অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলেও ধর্মীয় বিধি-নিষেধের কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান শ্রী কৃঞ্চ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, অভিযুক্ত ছেলে পলাতক থাকায় বিষয়টির আপোষ-মীমাংসা করতে সময় লাগছে। ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, আপনাদের মুখেই এই প্রথম বিষয়টি জানতে পারলাম। আমাদের কাছে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’