নীলফামারীর গোড়গ্রামে স্বামীকে হত্যা করে পালিয়ে থাকা স্ত্রী লাকী বেগমকে (৪০) চট্টগ্রামের হাটহাজারী দিঘিরপাড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃত লাকী বেগমকে নীলফামারী চিফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করা হলে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বামীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে স্ত্রী লাকী বেগম । নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আকতার বলেন, চলতি বছরের ১৭ই জানুয়ারী নীলফামারী সদর উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নের কির্ত্তিনিয়া পাড়া গ্রামে একটি তালাবন্ধ বাড়ি থেকে জাহিদুলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় জাহিদুলের মুখে ও শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চি‎হ্ন পাওয়া যায়। হত্যার শিকার জাহিদুল ইসলাম ওউ গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।

জবানবন্দীতে তৃতীয় স্ত্রী লাকী বেগম জানান, জাহিদুল ইসলাম চতুর্থ বিয়ে করায় স্বামীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গভীর রাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর লেপ দিয়ে লাশ ঢেকে রেখে পরদিন সকালে বাড়িতে তালা মেরে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। চট্টগ্রামে পৌঁছে একটি মেসে রান্নার কাজ নেন লাকী বেগম। ওসি আরো জানান, জাহিদুলের লাশ উদ্ধারের পর থেকে তার তৃতীয় স্ত্রী লাকী বেগমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘটনার পর থেকেই সে পলাতক ছিল। তার মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী দিঘিরপাড় এলাকায় অবস্থান জানতে পাওয়া যায়। পরে সেখান থেকে বুধবার গ্রেপ্তার করে নীলফামারী থানায় আনা হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে নীলফামারী চিফজুডিসীয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় স্বামীকে হত্যার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেন লাকী। পুলিশ জানায়, প্রায় একবছর আগে পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে লাকী বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় জাহিদুল ইসলামের। লাকী বেগম জাহিদুলের তৃতীয় স্ত্রী। ওই বাড়িতে বসবাস করতো জাহিদুল। এরই মধ্যে লাকীকে বিয়ের কয়েক মাস পর জাহিদুল চতুর্থ বিয়ে করে ওই স্ত্রীকে অন্যত্র রেখেছিলেন। এলাকাবাসী জানায়, জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে হঠাৎ করে বাড়িতে তালা দেখতে পাওয়া যায়। এরপর ধীরে ধীরে তালাবন্ধ ওই বাড়ি থেকে দূর্গদ্ধ বের হতে থাকলে বাড়ির লোকজনকে না পেয়ে গত ১৭ই জানুয়ারী পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে বাড়ির তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে একটি ঘর থেকে জাহিদুলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। এঘটনায় জাহিদুল ইসলামের বাবা আব্দুল খালেক বাদি হয়ে ওই দিনই নীলফামারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মহিনুল ইসলাম সুজন, বিশেষ প্রতিনিধি॥