দেশের এবং বিশ্বের শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বদা সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। সংবিধান ও দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় সেনাবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বৃহস্পতিবার সকালে নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসের সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ৬ষ্ঠ কোর পুনর্মিলনী-২০১৮ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।পরে প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।অনুষ্ঠানে উপস্থিত সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র সংবিধান এবং দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিং কোরকে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী অংশ হিসাবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কোরে ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড ও ডিভ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।ইঞ্জিনিয়ার সেন্টার অ্যান্ড স্কুল অফ মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে রিক্রুট প্রশিক্ষণের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।রামু ও উখিয়ায় সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার ও মন্দির সংস্কারে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লে খ করেন।
তিনি বলেন, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী একাগ্রতা, কর্মদক্ষতা এবং নানাবিধ জনসেবামূলক কর্মকান্ডের জন্য সার্বজনীন আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে।ৃ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে সেনা সদস্যদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা দেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল করেছে। যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় দুর্গতদের সাহায্য ও সহযোগিতা করে সশস্ত্র বাহিনী অনন্য দৃষ্টান্ত’ স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।উন্নত, পেশাদার এবং প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা প্রণীত নীতিমালার আলোকে আমরা আর্মড ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করে সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছি। সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া উদ্যোগের কথাও প্রধানমন্ত্রী তার ব্ক্তব্যে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে গত নয় বছরে আমরা সেনাবাহিনীর অবকাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছি। সৈনাবাহিনীতে নতুন পদাতিক ডিভিশন ও ব্রিগেড প্রতিষ্ঠাসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জাম সজ্জিত করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সেনাসদস্যদের জীবনমানের উন্নতি হয়েছে।আমরা সেনাবাহিনীর সকল পদবির সৈনিকদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ তাদের জন্য বাসস্থান, মেস, এসএম ব্যারাক নির্মাণ করেছি। বেতন ও রেশন বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করেছি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী গার্ড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী সকালে কাদিরাবাদ সেনানিবাসে পৌঁছালে সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক তাকে স্বাগত জানান।