সাতক্ষীরার ১ আসনের (তালা – কলারোয়া) সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ছেলে অনীক আজিজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সংসদ সদস্যদের হোস্টেল ৫ নম্বর ন্যাম ভবনের ৬০৪ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে রোববার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় । তার বয়স হয়েছিল ২৫ বছর। তার অকাল মৃত্যুর খবরে সাতক্ষীরার সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাকে শেষবারের মতো দেখতে তার বাড়িতে ভিড় করেন শত শত শুভাকাংখী। এদিকে ঢাকায় ময়না তদন্ত শেষে অনীকের মরদেহ বিকাল সাড়ে চারটায় হেলিকপ্টারে নিয়ে আসা হয় সাতক্ষীরায়। বাদ মাগরিব সাতক্ষীরা সরকারি স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয় তার নামাজে জানাযা । জানাযায় অংশ নেন তার বাবা এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো. মহিউদ্দিন , পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও অগনিত শুভাকাংখী। রাতে তাকে রসুলপুরে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয় ।

এর আগে তার দেহ তাদের পলাশপোলের বাড়িতে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা ঘটে। সেখানে হাজার হাজার নারী পুরুষের সমাগম ঘটে। এ সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার মা সাতক্ষীরা এ করিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন খান লিপিসহ পরিবারের সদস্যগন। তার বাবা সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ সাতক্ষীরা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি।

আত্মহননকারী অনীক আজিজ ২০০৮ সালে সাতক্ষীরা পল্লীমঙ্গল স্কুল এন্ড কলেজের ভোকেশনাল বিভাগ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ট্রেডে এ মাইনাস পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। পরে তিনি খুলনা সিটি পলিটেকনিক থেকে কমপিউটার বিষয়ে ডিপ্লোমা শেষ করেন। অনীক আজিজ ‘পাঠশালা একাডেমি’ তে টেলিভিশন জার্নালিজম ও ফিল্ম বিষয়ে প্রশিক্ষন গ্রহন করেন। একই সাথে তিনি ওঊখঞ (ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ লার্নিং এন্ড ট্রেইনিং) প্রশিক্ষন গ্রহন করছিলেন। গীটার বাদক ও সংস্কৃতিমনা হাসি খুশী সুদর্শন যুবক অনীক আজিজ বেশির ভাগ সময় ঢাকায় তার সংসদ সদস্য বাবার হোস্টেলে থাকতেন। এক সপ্তাহ আগেও তিনি এসেছিলেন বাড়িতে। তার একমাত্র বোন সৃষ্টি ঢাকায় আইন বিষয়ে লেখাপড়া করেন। অনীক ছিলেন সাতক্ষীরা গনজাগরন মঞ্চের একজন নিবেদিত কর্মী।অনীক কেনো আত্মহননের পথ বেছে নিলেন তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। এ ব্যাপারে তার শোকার্ত বাবা মার কাছ থেকেও জানা যায়নি কোনো তথ্য। তবে গুঞ্জন রয়েছে অনীক একটি লাভ অ্যাফেয়ার্সে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তারই জেরে এ ঘটনা ঘটলো কিনা তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।