ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ের সংসদ সদস্য ভবন (ন্যাম ভবন) থেকে সাতক্ষীরার সাংসদ মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ছেলে অনীক আজিজ স্বাক্ষরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাতক্ষীরা-১ আসনের সাংসদ মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ছেলে অনীক আজিজ আত্মহত্যা করেছেন বলেই ময়নাতদন্তে লক্ষণ মিলেছে। রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তাঁর লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে নিয়ে আসা হয়।ময়নাতদন্ত শেষে বেলা একটায় লাশ নিয়ে যাওয়া হয়।

ময়নাতদন্ত শেষে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক এ এম সেলিম রেজা সাংবাদিকদের বলেন,সুরতহাল প্রতিবেদনে আত্মহত্যার যে সন্দেহের কথা বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তেও আমরা সে রকম লক্ষণ পেয়েছি। তাঁর শরীরে কোনো দাগ নেই।পুলিশ সকালে ঢাকায় এমপি হোস্টেলে সাংসদের বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে। অনীক খুলনা পলিটেকনিক থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমা করেছিলেন।ঢাকায় আইইএলটিএস করছিলেন।সুরতহালে পুলিশ এ ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে, একই মত প্রকাশ করেছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

শেরেবাংলা নগর থানার ওসি গনেশ গোপাল বিশ্বাস বলেন, রোববার সকালে খবর পেয়ে তারা ৫ নম্বর ভবনে সাংসদের বাসা থেকে অনীকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন।পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে অনীকের ময়নাতদন্ত হয়।২৭ বছর বয়সী অনীক খুলনার সিটি পলিটেকনিক থেকে ইলেক্ট্রিক্যালে ডিপ্লোমা করে বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে আইইএলটিএস করছিলেন। পাশাপাশি পাঠশালায় ফটোগ্রাফির কোর্স করছিলেন তিনি।শেরেবাংলা নগর থানার এসআই শফিকুর জানান, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের তার গলায় পেঁচানো অবস্থায় অনীকের দেহ শোবার ঘরের ফ্যান থেকে ঝুলছিল। তার শরীরে আর কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

অনীকের লাশের ময়নাতদন্ত করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এ এম সেলিম রেজা।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে যা লেখা হয়েছে, ময়নাতদন্ত করে তারও একই ধারণা হয়েছে।পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে কী ছিল জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলেন, লেখা ছিল গলায় তার পেঁচিয়ে আত্মহত্যা। আমার ফাইন্ডিংসেও তাই পাওয়া গেছে।অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য। সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসন থেকে এবারই প্রথম তিনি এমপি হয়েছেন।শনিবার রাতে ন্যাম ভবনের ওই বাসায় ছিলেন অনীক, তার বোন অদিতি আদৃতা সৃষ্টি এবং তাদের পরিবারের এক ড্রাইভার।

সাংসদ মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ও তার স্ত্রী নাসরীন খান লিপি শনিবার ছিলেন সাতক্ষীরায়। রোববার সকালেই তারা ঢাকায় ফেরেন। সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারী মফিজুল হক জাহাঙ্গীর বলেন, রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই ঘুমাতে যায়। সকালে সবাই উঠলেও অনীক উঠছিল না। অনেক ডাকাডাকির পরও সাড়া না পেয়ে বিকল্প চাবি দিয়ে ঘরের দরজা খুলে ভেতরে লাশ পাওয়া যায়।অনীকের চাচা আবদুল্লাহ আল মর্তুজা বলেন, আমরা ওর ল্যাপটপ, মোবাইল চেক করে দেখার চেষ্টা করছি। জানি না কীভাবে কী হল।জাহাঙ্গীর জানান, ময়নাতদন্ত শেষে অনীকের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে সাতক্ষীরা সদরের পলাশপোলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই তার দাফন হবে।