মন্ত্রিসভায় রদবদল হয়েছে। বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে এসেছেন একেএম শাহজাহান কামাল। এতদিন এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। বুধবার মন্ত্রিসভায় এ রদবদল আনা হয়। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নতুন তিন মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন। তাদেরই একজন হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শাহজাহান কামাল। একেএম শাহজাহান কামাল লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। পেশাগত জীবনে তিনি একজন ব্যবসায়ী।

একেএম শাহজাহান কামাল ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুর জেলার আটিয়াতলীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মো. ফরিদ আহমেদ ও মাতা মাসুমা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম ফেরদৌসি কামাল। তিনি এক পুত্র ও তিন কন্যাসন্তানের জনক। মন্ত্রী শাহজাহান কামাল ১৯৬৩ সালে লক্ষ্মীপুর মডেল হাইস্কুল থেকে এসএসসি, চৌমুহনী মদন মোহন কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে এইচএসসি পাস করেন এবং একই কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ও ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। এ সময় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবিতে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। একেএম শাহজাহান কামাল একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় সক্রিয়ভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। একেএম শাহজাহান কামাল ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলায় গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি নবগঠিত লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ১৯৮৫ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

২০১১ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

পেশাগত জীবনে তিনি একজন ব্যবসায়ী। ২০০৯ সালে জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ব্যবসা ও রাজনীতির পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত। তিনি ক্যান্সার রোগী, প্রতিবন্ধী, বিধবা ও গরিব মানুষকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা দিয়ে থাকেন। তিনি বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় দক্ষ। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সিঙ্গাপুর, ভারত ও জার্মানি ভ্রমণ করেছেন।