বাংলাদেশে নিম্ন আদালতের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান এককভাবে সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত করার সুপারিশ দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) টিআইবির বাংলাদেশের অধস্তন আদালত ব্যবস্থা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণায় এ সুপারিশ করা হয়।

গবেষণায় বলা হয়েছে, দ্বৈত প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কারণে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হচ্ছে। নিম্ন আদালত সংক্রান্ত কোনও উদ্যোগ বা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক সমন্বয়ের ঘাটতির কারণে কিছু ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ বা দীর্ঘসূত্রিতা হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কোনও সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্ট নাকচ করে দেওয়ার পরও মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়ন করেছে। উদাহরণ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রেষণে কর্মরত বিচারিক কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণে যাওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়।

দ্বৈত প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কারণে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছে টিআইবি। গবেষণায় বলা হয়, বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের আগে বিচারকদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির বিষয়গুলো সংস্থাপন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল। বর্তমানে তা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে। যা কিছু ক্ষেত্রে নিম্ন আদালত ব্যবস্থার কার্যক্রমে প্রভাব ফেলার ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।

টিআইবি’র এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরিতে দেশের ১৮টি জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মুখ্য তথ্যদাতা ও নিবিড় সাক্ষাৎকারদাতারা হলেনÑ নিম্ন আদালতের বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, আইনজীবীদের সহকারী, জেলা আইনগত সহায়তা কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী ও অন্যান্যরা। এছাড়া আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে দলগত আলোচনা করা হয়েছে।গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবি’র রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাম্মী লায়লা ইসলাম ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুল হুদা মিনা। এ সময় ছিলেন টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়েরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।