অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২১৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে চীনের একটি ইস্পাত প্রতিষ্ঠান।চীনের কুনমিং আয়রন অ্যান্ড স্টিল হোল্ডিং কোম্পানির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনান ইয়ংগল ওভারসিজ ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বেজার এই চুক্তিটি হয় বুধবার ঢাকার একটি হোটলে।পাশাপাশি এদেশিয় সহযোগী স্টার কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে আরেকটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে চীনের প্রতিষ্ঠানটি।ইউনান ইয়ংগলের পক্ষে দুই সমঝোতায় সই করেন এর চেয়ারম্যান উ ইয়ুনকুন।অন্যদিকে বেজার পক্ষে নির্বাহী সদস্য হারুন উর রশীদ ও স্টার কনসোর্টিয়ামের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হক চৌধুরী চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মূলত ইস্পাত কারখানা ও পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ইউনান ইয়ংগল ওভারসিজ। এরজন্য বেজার কাছে এক হাজার একর জমি চেয়েছে তারা। স্থান নির্বাচনের জন্য মহেশখালী ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে সম্ভাব্যতা যাচাই করবে প্রতিষ্ঠানটি।সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সাত থেকে ১০ মাস সময় লাগতে পারে জানিয়ে স্টার কনসোর্টিয়ামের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, এখানেও ১০ থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার খরচ হবে। তারপর জায়গা ঠিক হলে কাজের দিকে যাবে।তিনি বলেন, প্রতিবছর দুই মিলিয়ন টন লোহা ও ইস্পাত উৎপাদনই নয়, এর সঙ্গে আরো কিছু বিষয় সংযুক্ত থাকবে। তার মধ্যে রয়েছে- কয়লাচালিত পাওয়ার প্ল্যান্ট, গভীর সমুদ্রে ট্রান্সফার প্ল্যাটফর্ম ও প্রাইভেট জেটি, সিমেন্ট ও বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল, ডিভাইস ও মেশিন উৎপাদন এবং স্টিল স্ট্রাকচার প্রভৃতি।এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ইস্পাত উৎপাদন মেশিনারির জন্য আর বিদেশনির্ভর হয়ে থাকতে হবে না বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত আইন করার প্রক্রিয়াও আমাদের রয়েছে। বিনিয়োগ বিষয়ে বেজা ও বিডা প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে সহজে যোগাযোগ করতে পারছে।একই সঙ্গে বেজা ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জায়গা নির্ধারণ করে কাজ শুরু করেছি। এখন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও কীভাবে বড় ধরনের অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা যায়, সেটা নিয়ে কাজ চলছে।এ সময় ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংকিয়াং বলেন, “বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সূত্র ধরে আজকের এই সমঝোতা স্মারক সই হলো। বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হলে আরো চীনা কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করতে পারবে।অনুষ্ঠানের সভাপতি বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, “অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য প্রায় সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। কুনমিং আয়রন ও স্টিলের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।অনুষ্ঠানে বেজার সদস্য ড. ইমদাদুল হক, বিজিএমইএ সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান, ইউনান ইয়ংগল ওভারসিজ ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির চেয়ারম্যান উ ইয়ুনকুন বক্তব্য দেন।