পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি বলেছেন, জ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমেই সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব। এ লক্ষ্যেই আইইউটি তার অবদান রেখে যাচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে তা বিতরণে কাজ করছে। যা মুসলিম বিশ্বের টেকসই উন্নয়নের জন্য দরকার। এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান থাকায় এবং এর সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ গর্বিত। আইইউটি’র স্নাতকরা শুধুমাত্র বাংলাদেশসহ ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রই নয়, প্রকৌশল ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তারা সারা বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি তৈরী করার জন্য আইইউটি প্রশংসনীয় ভ’মিকা পালন করছে। এখানকার তরুণ শিক্ষার্থীরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে পরিবর্তনশীল জ্ঞান-বিজ্ঞান অনুশীলন করে গৌরবময় মুসলিম উম্মাহকে আগামিতে আরো এগিয়ে নিতে সক্ষম হবে। আমি জেনে খুশি হয়েছি যে প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে গত ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম এ প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। পাশাপশি মেয়েদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য সরকার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আপাতত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের অস্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি চমৎকার পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আমাদের সরকারের সমর্থন অব্যহত থাকবে।
মন্ত্রী বুধবার গাজীপুরের বোর্ডবাজারে অবস্থিত ওআইসি পরিচালিত ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি’র (আইইউটি) ৩১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইউটি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নুর। অনুষ্ঠানে ওআইসির মহাসচিব ও আইইউটি’র আচার্য ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল-ওথাইমিন-এর বাণী পাঠ করেন আইইউটি’র টেকনিক্যাল এন্ড ভোকেশনাল এডুকেশন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক চি কুম ক্লেমেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন আইইউটি’র গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ সাঈদ আলালাম আলজাহ্রানী এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারী। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পৌঁছলে আইইউটির উপাচার্য, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ তাঁকে স্বাগত জানান। মন্ত্রী গাউন পড়ে আনুষ্ঠানিক সমাবর্তন শোভাযাত্রা সহকারে অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে হাজির হন।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা অনেক চ্যালেঞ্জসহ পরিবর্তনশীল বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করছি। এই পরিবর্তনের শর্ত পূরনের জন্য প্রতিটি দেশের নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হল “জনগণের ক্ষমতায়ন” এবং পরিবর্তনের এজেন্টগুলোর উন্নয়ন। দক্ষতা, জ্ঞান এবং প্রযুক্তি থেকে ক্ষমতায়ন আসে। আইইউটি এই অবদানই রাখছে এবং এখানকার ছাত্ররা একই প্রচেষ্টা করছে। অতীতে অনেক মুসলিম জ্ঞানী ও বিজ্ঞানী বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক অবদান রেখে গেছেন এবং গৌরবময় সেই ইসলামী উম্মাহ আমরা বহন করে চলছি। এ আলোকেই তরুণ শিক্ষার্থীরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে পরিবর্তনশীল জ্ঞান-বিজ্ঞান অনুশীলন করে গৌরবময় মুসলিম উম্মাহকে আগামিতে আরো এগিয়ে নিতে সক্ষম হবে।
সমাবর্তনে বাংলাদেশসহ ওআইসির অন্তর্ভূক্ত বিভিন্ন দেশের গ্রাজুয়েট সম্পন্ন ৩১৬ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন প্রধান অতিথি। এসময় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য নাইজেরিয়ার শিক্ষার্থী ইব্রাহিম আদামুকে ওআইসি পদক এবং বাংলাদেশের ইরতিজা ইনাম কবির, আবির আহসান, ওমর সাদাব চৌধুরী ও সাব্বির আহমেদকে আইইউটি স্বর্ণপদক ও সনদ দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে মাস্টার্স ও ব্যাচেলর ডিগ্রিপ্রাপ্ত ৩১৬জনকে সনদ প্রদান করা হয়। এদের মধ্যে সর্বাধিক ডিগ্রিপ্রাপ্তরা হচ্ছেন বাংলাদেশের। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিকে আইইউটি ক্রেস্ট দেয়া হয়।