লালমনিরহাটের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী এম.টি হোসেন ইনস্টিটিউটের জমি দখল করে সেখানে এলসিসিআই মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের সদর দপ্তরের ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানের জায়গায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করছে লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষ। আর এ উদ্যোগে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে জেলার সচেতন মহলে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ১৯০৫ সালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার পৌরভবনের কাছে দক্ষিণ সাপটানা মৌজা (বাবুপাড়া) এলাকায় এম.টি. হোসেন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। যেটি ব্রিটিশ ভারত সময়ের ঘূর্ণায়মান মঞ্চবিশিষ্ট রেলওয়ে অডিটোরিয়াম হিসেবে বহুল পরিচিত। কিন্তু ১৯৮৩ সালের পর থেকে জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে এখানে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠানটির সংস্কারের জন্য লালমনিরহাটের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। উল্টো শতবর্ষী এ প্রতিষ্ঠানের জমিতে বাণিজ্যিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের কার্যক্রমে জেলাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে কিছু শ্রমিক বাঁশ ও টিন দিয়ে ঘরের চালা তৈরির কাজ করছেন। এরই মধ্যে পুরো স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনের জন্য তৈরি করা হয়েছে নকশা। এ সময় শ্রমিকরা জানান, চেম্বার থেকে তাদের মজুরিও দেয়া হয়েছে। তাদের নির্দেশ অনুযায়ীই তারা কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে কথা হলে এলসিসিআইয়ের প্রধান শিক্ষক গিরিন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, ২০১০ সাল থেকে থানা রোডের ক্যাম্পাসে এলসিসিআই মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঠদান হয়ে আসছে। ওই ক্যাম্পাসে এখন আর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। যে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে পরিচালনা কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে ২ নভেম্বর এম. টি. হোসেন ইনস্টিটিউটের চত্বরে নতুন ভবনের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।

লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ও ঠিকাদার কামরুল ইসলাম বকুল বলেন, থানা রোডে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তর করা হচ্ছে। অবশ্য সেজন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে জমি লিজ নেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পদ কর্মকর্তা রেজুয়ানুল হক বলেন, এলসিসিআই মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে কোনো প্রতিষ্ঠানকে এম.টি. হোসেন ইনস্টিটিউটের রেলওয়ের জমি লিজ দেয়া হয়নি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) নাজমুল ইসলাম বলেন, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এম. টি. হোসেন ইনস্টিটিউট চত্বর এলাকায় রেলওয়ের জমি লিজ দেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।