ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা: রাশেদা সুলাতানার তেলেসমাতি কারবার ফাঁসের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে তিনি মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে শৈলকুপার শামীম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক কমপে¬ক্স এর লাইসেন্স এর সার্বিক কাগজপত্র সম্পন্ন করেছেন। এ ব্যাপারে ডা: রাশেদা সুলাতানা বলেন, তার স্বাক্ষর, সীল জালিয়াতি করে কেউ কাগজপত্র তৈরি করলে তার দায়ভার সিভিল সার্জনের নয়। তবে রেজিষ্ট্রারের স্মারক, ডকেট ও শৈলকুপার শামীম হাসপাতালের নামে অফিস ফাইল দেখাতে তিনি সাংবাদিকদের নিকট অপরাগতা প্রকাশ করেন। লিখিত অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১৩-০৩-২০১৭ তারিখে শামীম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক কমপে¬ক্স এর মালিক শাহিন আক্তার মহা-পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরাবরে লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সিভিল সার্জনের মাধ্যমে আবেদন করেন। সিভিল সার্জন রাশেদা সুলতানা মহা-পরিচালক বরাবরে আবেদনটি না পাঠিয়ে এবং মহাপরিচালকের অনুমতিপত্র ছাড়াই পরদিন ১৪-০৩-২০১৭ইং তারিখে স্মারক নং-সিএসঝি/শা-৩/২০১৭/৫৭৮ এর প্রেক্ষিতে ১৬-০৩-২০১৭ তারিখে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের চিঠি করেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকার স্মারক নং স্বাঃ অধিঃ/ হাসঃ/প্রাইভেট ক্লিনিক/২০১৬/১৯৬ তারিখ-০৫-০১-১৭ ব্যবহার করেন। যেখানে আবেদনই করা হয়েছে ১৩/০৩/২০১৭ সেখানে দুই মাস পূর্বের ০৫/০১/১৭ এর আবেদনের প্রেক্ষাপট রহস্যজনক বলেই আপাতদৃষ্টে মনে হয়। এছাড়া ১৬-০৩-২০১৭ তারিখে ক্লিনিক পরিদর্শন টিম আবেদনে শুধুমাত্র তানিশা (প্রা:) ক্লিনিকের নাম পরিবর্তনের উলে¬খ করলেও মহা-পরিচালক বরাবরে স্মারক নং- সিএসঝি/শা-৩/২০১৭/৬০৮/১ এর চিঠিতে সনোপ¬াস ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নাম জুড়ে দেওয়া হয় যা শৈলকুপাতে নাই। এর পর ২৯-০৩-২০১৭ তারিখে ৮২১০ নং লাইসেন্সটি ইস্যু করা হয় শামীম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক কমপে¬ক্স এর নামে, যার মেয়াদ ছিল ৩০-০৬-২০১৭ পর্যন্ত।

এছাড়াও শাহিন আক্তার আদালতে একই তারিখে ইস্যু করা শামীম হাসপাতালের নামে ১৩৭৫ নং লাইসেন্সটির মালিক হিসেবেও দাবি করেছেন। সচেতন মহলের জিজ্ঞাসা একই প্রতিষ্ঠানের নামে ২টা লাইসেন্স কারন ও উদ্দেশ্য কি ? প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সিভিল সার্জন বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করলেও তিনি কোন কর্ণপাত করেন নাই বরং নিয়মনীতি উপেক্ষা করেই চলছে শৈলকুপার শামীম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক কমপ্লে¬ক্স। শামীম হাসপাতালের কোন সেক্টরে প্রয়োজনীয় ডিপে¬ামাধারী নেই, সার্বক্ষনিক ডাক্তার নেই, অগ্নিনির্বাপক লাইসেন্স নেই এমনকি বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগও নেই। তবে প্রতিষ্ঠানটির মালিক শাহিন আক্তারের নেপথ্য শক্তির উৎস কোথায় জানতে চায় শৈলকুপার সুধি মহল। তার রয়েছে ২টা টিন নম্বর, নামে বেনামে কয়েকটা ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার। জরিপ বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক শাহিন আক্তার এর বিভিন্ন জালজালিয়াতির বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও রয়েছে একাধিক। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলা প্রচুর বিত্ত বৈভবের মালিক সম্প্রতি শৈলকুপার কবিরপুর মোড়ের মোল¬া টাওয়ারে গড়ে তুলেছেন যথাযথ কাগজপত্রহীন শামীম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক কমপে¬ক্স, যার নেপথ্যে শক্তির আধার হিসেবে জেলা সিভিল সার্জন কর্মকর্তা রাশেদা সুলতানা ও বিশেষ সহকারি নজরুল ইসলাম কাজ করছেন বলে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ব্যাপারে ডা: রাশেদা সুলাতানা বলেন, তার স্বাক্ষর, সীল জালিয়াতি করে কেউ কাগজপত্র তৈরি করতে পারে, তাছাড়া ১৩-০৩-২০১৭ তারিখে মহা-পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরাবরে আবেদন করে ১৪-০৩-২০১৭ইং তারিখেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ ছাড়া ১৬-০৩-২০১৭ তারিখে অডিট টিম গঠন, ১৯-০৩-২০১৭ তারিখে আদেশ ও ২৯-০৩-২০১৭ তারিখে শামীম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক কমপে¬ক্স এর নামে ইস্যু করা ৮২১০ নং লাইসেন্সটি অনেকটা রাতের আঁধারের মতই মনে হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে রেজিষ্ট্রারের স্মারক, ডকেট ও শামীম হাসপাতালের অফিস ফাইল দেখাতে তিনি সাংবাদিকদের নিকট অপরাগতা প্রকাশ করেন।