মিয়ানমারের কাছ থেকে যে ধরনের ব্যবহার আশা করেছিল বাংলাদেশ, তা পাওয়া যায়নি বলে হতাশা ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। রবিবার স্থানীয় একটি হোটেলে ইউএন উইমেন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ মন্তব্য করেন।তিনি জানান,আমরা মিয়ানমারের কাছ থেকে এর চেয়ে ভালো রেসপন্স (প্রতিক্রিয়া) আশা করেছিলাম। কিন্তু, যেভাবে আমরা আলোচনা শুরু করেছিলাম, এই মুহূর্তে ঠিক বলতে পারছি না, আমরা সন্তুষ্ট। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বিষয়ে তিনি বলেন, এটির কাজ চলছে এবং এটি গঠনের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া আছে।উল্লেখ্য, নভেম্বরের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন সম্পন্ন হবে বলে দু’পক্ষ একমত হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মিয়ানমার সফরের সময় এটি নির্ধারিত হয়।তিনি বলেন, এটির সমাধানের কোনও শর্টকাট নেই। আমাদের দেশের মানুষ আটকা পড়লে আমরাও বলি যাচাই-বাছাই করতে হবে। কারণ, আন্তর্জাতিক নিয়মগুলো সেভাবেই তৈরি করা আছে। সবাইকে একসঙ্গে ধরে পাঠিয়ে দেওয়ার অবকাশ নেই।

সমস্যাটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘায়িত শব্দটি আপেক্ষিক। আগে এ ধরনের প্রক্রিয়া ঘটনা ঘটার অনেকদিন পরে শুরু হতো, এখন দেড় মাসের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শুরু করতে পেরেছি। এটি ভালো লক্ষণ। এটি কতটুকু গতিশীলতা পাবে আমরা দেখবো। কিন্তু, গতি আরও বাড়ানোর জন্য যে বহুপাক্ষিক চাপ রাখার কথা সেটি আমরা বজায় রেখেছি।চাপ বন্ধ হলে কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাপ বন্ধ হলে কী হবে সে বিষয়ে জল্পনা-কল্পনা করাটা ঠিক হবে না। আর বন্ধ হওয়ার কোনও সম্ভাবনাও দেখছি না। এই অবস্থায় এই সময় যে ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রাখা দরকার সেটি সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যাবে। মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করার কোনও বিকল্প নাই।জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ আগে দেখা যাক, নিরাপত্তা পরিষদে কে কী অবস্থান নিচ্ছে, তারপর এ বিষয়ে কথা বলা যাবে। আমাদের প্রত্যাশা হলো সব দেশ মিলে একটি শক্ত ব্যবস্থা নেবে।

ইউএন উইমেন আয়োজিত নিরাপত্তা কাউন্সিল রেজ্যুলেশন-১৩২৫ বিষয়ে তিনি বলেন, এর অধীনে আমরা নারীদের ক্ষমতায়ন বিষয়ে জাতীয় অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছি। আমরা আশা করছি, এটা মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে উপস্থাপন করবো। এ ধরনের অ্যাকশন প্ল্যান সাধারণত মন্ত্রিপরিষদ সভায় উপস্থাপন করা হয় না কিন্তু যেহেতু এটি একটি রাজনৈতিক ডক্যুমেন্ট (নথি), আমরা চাই দেশের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটি এটি অনুমোদন করুক। এদিকে, রোহিঙ্গাদের আক্রমণে এক বাঙালি নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।রোববার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।মায়া বলেন, ইতোমধ্যে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাক তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। রোহিঙ্গারা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য সরকার তৎপর জানিয়ে তিনি বলেন, যেসব রোহিঙ্গা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাদের সবাইকে কুতুপালং ক্যাম্পে আনা হচ্ছে। সেখানে পাঁচটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে আমরা রোহিঙ্গাদের খাদ্য সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি। তাদের খাদ্যের কোনো অভাব নেই। এখন সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ হচ্ছে।