গাজীপুরের শ্রীপুরে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে পিঠের টিউমার অপারেশন করাতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারনে চার মাসের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম রাফিক। সে শ্রীপুর উপজেলার সিংগাদিঘী গ্রামের সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালক আল আমিনের ছেলে। ঘটনার পর হাতুড়ে ডাক্তার আলম মিয়া এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পুলিশ নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে শনিবার ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

শ্রীপুর মডেল থানার এসআই আবুল হাসান ও নিহতের দাদা মুজিবুর রহমান জানান, গত কিছুদিন ধরে শিশু রফিকের পিঠের ডান পাশে পাঁজরের উপরে একটি মাংসপিন্ড ফুলে উঠতে দেখা যায়। শুক্রবার সকালে রফিককে নিয়ে স্থানীয় চকপাড়া মেডিক্যাল মোড়ের আলম ফার্মেসীতে নিয়ে যান তার বাবা আল-আমিন। সেখানে ওই ফার্মেসীর মালিক হাতুড়ে চিকিৎসক আলম মিয়া ফুলে যাওয়া অংশটি টিউমার হিসেবে চিহ্নিত করে। আলম মিয়া স্থানীয় কপাটিয়া পাড়া গ্রামের মৃত কাজিম উদ্দিনের ছেলে। ওই চিকিৎসক টিউমারটি অপারেশন করে ফেলে দেয়ার পরামর্শ দেন এবং তিনি নিজেই অপারেশনটি তার ফার্মেসীতে করতে পারবেন বলে দাবী করেন। ওই অপারেশনে চার হাজার টাকা ফি’র চুক্তিতে দু’হাজার টাকা অগ্রিম নিয়ে আলম কোন প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই ওই শিশুর পিঠের টিউমারটি ব্লেড দিয়ে কেটে অপারেশনের কাজ শুরু করে। এতে শিশুটির রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসক আলম তা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে রোগী ফেলে ডাক্তার আলম ও তার সহযোগীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা আশংকাজনক অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুরের মাওনাস্থিত আল হেরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে রাতে শিশুটি মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে এবং ময়না তদন্তের জন্য শনিবার গাজীপুরের শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর বাবা আল আমিন বাদী হয়ে অনধিকার অস্ত্রোপচার আইনে ওই হাতুড়ে চিকিৎসক আলম মিয়ার বিরুদ্ধে শ্রীপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত চিকিৎসক পলাতক রয়েছে।