ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে পাসপোর্ট করতে এসে বগুড়ায় ধরা পড়েছে ২ রোহিঙ্গা নারী ও এক শিশু।এরা হলো-হাজেরা বিবি(২২), রমিজা(৪০) এবং ওসমানগনি(৭)। পুলিশ তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে রেখেছে। এদের মধ্যে হাজেরা বুধবার বিকালে পাসপোর্ট করতে বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এসেছিলো। অপর ২ জনকে বৃহস্পতিবার বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থকে আনা হয়।

পুলিশ জানায়, বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অন লাইনের মাধ্যমে ফরম পুরন করে হাজেরা বিবি নামে এক তরুনী ফিঙ্গার প্রিন্ট(আঙ্গুলের ছাপ) দিতে এসেছিলো। এসময় পাসপোর্ট দপ্তরের কর্মকর্তার সন্দেহ হলে তাদের জিঞ্জাসা করলে অসামঞ্জস্যতা ধরা পড়ে। পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ শাজাহান জানান, হাজেরার ভাষা এবং আচরণ ছিলো অসামঞ্জস্যপুর্ন। তবে ওই তরুনীকে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার এক ব্যক্তি নিজের আত্মীয় বলে সনাক্ত করেছিলো। রোহিঙ্গা হিসাবে ওই তরুনীকে মনে হওয়ায় পাসপোর্ট অফিস থেকে বগুড়া সদর থানায় খবর দেয়া হলে পুলিশ রোহিঙ্গা তরুনী ও তাকে আত্মীয় হিসাবে সনাক্তকারী ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ জানতে পারে ওই তরুনী রোহিঙ্গা। পুলিশ জানায়, তরুনী পাসপোর্ট অফিসে সনাক্তকারী ব্যক্তির নাম আব্দুস সাত্তার, তার বাড়ি দুপচাঁচিয়ার তারাজুল গ্রামে। পরে পুলিশ তরুনীর মা রমিজা( পাসপোর্ট অফিসে দেয়া কাগজপত্র অনুযায়ি তার নাম আমেনা বিবি) ও হাজেরার ৭ বছরের শিশু সন্তান হিসাবে দাবি করা ওসমান গনিকে সদর থানায় আনে। পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশ সুত্র জানায়, তারা বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলার ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে জন্ম সনদ সহ অন্যান্য কাগজপত্র পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে এসেছিলো। পাসপোর্টের জন্য দেয়া আবেদনে দুপচাঁচিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেয়া জন্ম সনদ সহ অন্যান্য কাগজপত্র দেয়া হয়েছিলো। আর এসব কাগজপত্র সত্যায়িত করা হয়েছে আজমিরা পারভীন নামে এক আইনজীবীর মাধ্যমে। তিনি জানিয়েছেন, নোটারী পাবলিকের কাজে জন্ম সনদ থাকলে তারা সত্যায়িত করেন। অপর দিকে থানায় নিরাপত্তা হেফাজতে থাকা ৩ রোহিঙ্গা নারী শিশুর মধ্যে রমিজা ওরফে আমেনা জানিয়েছেন, তারা চট্টগ্রামের ছলিম উল্লাহ নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে বগুড়ায় এসেছিলেন। ওই ব্যক্তিকে তারা ২ হাজার টাকা দিয়েছিলেন বগুড়ায় তাদের আনার জন্য। রমিজার মেয়ে হাজেরা সংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। তবে রমিজা দাবি করেছেন, তার জামাই মোঃ ছালেহ ইন্দোনেশিয়ায় থাকেন। রমিজা সেখানে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করছিলো। বগুড়া সদর থানার ওসি এমদাদ হোসেন জানিয়েছেন, ২ রোহিঙ্গা নারী ও এক শিশুকে থানার নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের কক্সবাজার পুলিশের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর তাদের কে বগুড়ায় এনেছিলে, সে বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।