গাজীপুর শহরের দুইটি ‘জঙ্গি আস্তানায়’ বন্ধুকযুদ্ধে নিহত নয় জনের মধ্যে পাঁচ জনের পরিচয় এক বছরেও পাওয়া যায়নি।গত বছরের ৮ অক্টোবর সিটি করপোরেশনের পাতারটেকে সৌদি প্রবাসী সোলায়মানের বাড়িতে এবং হাড়িনাল পশ্চিমপাড়া লেবুবাগান এলাকায় আতাউরের বাড়িতে অভিযান চালায় আইনশৃংখলা বাহিনী।দুই অভিযানে বন্ধুকযুদ্ধে নিহত নয় জনের মধ্যে চার জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।এ দুই ঘটনায় দুটি মামলা হলেও এখনও তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি।

জয়দেবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, গত বছরের ৮ অক্টোবর সকাল ৯টার দিকে সৌদি আরব প্রবাসী সোলায়মানের বাড়িতে ‘জঙ্গি নেতা’ আকাশসহ কয়েকজন ‘জঙ্গি’ অবস্থান করার খবর পেয়ে সেখানে দিনভর অভিযান চালায় আইনশৃংখলা বাহিনী।এ সময় দুপক্ষের বন্দুকযুদ্ধে নিহত সাত জঙ্গির মধ্যে তিন জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার বড়ইতলা গ্রামের আবু সাইদের ছেলে ফরিদুল ইসলাম আকাশ (২৭), ঢাকার বংশালের পুরাতন মোগলটুলীর আজিম উদ্দিনের ছেলে ইব্রাহীম (১৯) ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মনিরগাতির মতিউর রহমানের ছেলে সাইফুর রহমান (১৯)।নিহত অপর চার জঙ্গির পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও জানান, পরিচয় পাওয়ার পরও তিন জঙ্গির মরদেহ তাদের স্বজনরা নিতে আসেনি। পরে ঢাকার কুর্মিটুলা জেনারেল হাসপাতালের হিমঘরে রাখা সাতটি মরদেহ ছয় মাস পর আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়।মামলাটির ব্যাপারে ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজির মনিটরিং সেল ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তাদের অনুমতি পেলে শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।পরিদর্শক মাহমুদুল জানান, ওই ঘটনার রাতেই জয়দেবপুর থানার তৎকালীন ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।মামলায় বলা হয়-প্রথমে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। এতে সাড়া না দিয়ে জঙ্গিরা গুলি ও গ্রেনেড ছুড়লে আইনশৃংখলা বাহিনীও পাল্টা জবাব দেয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত থেমে থেমে ব্যাপক গোলাগুলি চলে। প্রায় ৭ ঘণ্টার এ অভিযানে মারা যায় সাত জঙ্গি।ওই ‘আস্তানা’ থেকে একটি একে-২২ রাইফেল, তিনটি পিস্তল, কয়েকটি গ্রেনেড, ম্যাগাজিন, বেশ কিছু ছুরি ও চাপাতি, গ্যাস সিলিন্ডার, পুড়িয়ে দেয়া ও ভাঙা ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয় বলে পরিদর্শক মাহমুদুল জানান।র‌্যাব-১ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হানিফ জানান, গত বছরের ৮ অক্টোবর ভোর ৩টার দিকে হাড়িনাল পশ্চিমপাড়া লেবুবাগান এলাকায় বাইতুল এবাদত জামে মসজিদসংলগ্ন আতাউরের বাড়ি ঘিরে ফেলে র‌্যাব। সেখানে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই জঙ্গি নিহত হয়। তাদের মধ্যে একজনের নাম পাওয়া গেলেও অপরজনের নাম-পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।পরে তাদের আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়।এ ব্যাপারে দায়ের করা র‌্যাবের মামলাটি এখনও তদন্তাধীন বলে জানান তিনি।