ভিসা পাওয়ার পরেও হজে যেতে না পেরে ৯৮ জন হজযাত্রী ১৮টি হজ এজেন্সির বিরনুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আর ভিসা পেয়েও হজে যেতে পারেননি ৩৬৭ জন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব হাফিজুর রহমান।তিনি বলেন, এবার ১ লাখ ২৭ হাজার ৫৯৬ জন বাংলাদেশি হজে যাওয়ার ভিসা পেয়েছিলেন। এদের মধ্যে ১ লাখ ২৭ হাজার ২২৯ জন সৌদি গিয়েছেন। সেই হিসেবে ৩৬৭ জন বিভিন্ন কারণে হজে যেতে পারেননি।৩৬৭ জনের মধ্যে কেউ অসুস্থতার জন্য, কেউ হজ ফ্লাইটে না গিয়ে অন্য রুটে বা মারা যাওয়ার কারণে কেউ কেউ হজে যায়নি বলে জানান যুগ্ম-সচিব হাফিজুর।তিনি বলেন, সব রিপোর্ট পাওয়ার পর কতজন হজে যাননি সেই সংখ্যাটা নিশ্চিত করে বলা যাবে।৯৮ জন হজযাত্রী ১৮টি হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন জানিয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, অর্থাৎ এদের হজে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল, তারা যেতে পারেননি।
এদের পাসপোর্ট ছিল, ভিসা ছিল, কিন্তু টিকেট ছিল না। হজ এজেন্সির প্রতিনিধিও হজ ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন না। আমাদের কাছে ৯৮ জন হজ যাত্রীর অভিযোগ রেকর্ডভুক্ত হয়েছে।এছাড়া হজ অফিস একটি জিডি করেছে জানিয়ে হাফিজুর বলেন, এর ভিত্তিতে যেন দায়ী হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারি। তদন্ত করে মূল কারণগুলো বের করা হবে।অভিযোগ দেওয়া ৯৮ জনকে আগামী বছর অগ্রাধিকারের ভিত্তিকে হজে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান যুগ্ম-সচিব।
এদিকে, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় হজ ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের সাথে জড়িত ট্রাভেল এজেন্সীগুলোর বিরুদ্ধে জরিমানাসহ লাইসেন্সে বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।সংসদ ভবনে আজ কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সুপারিশ করা হয়।সভায় আগামী হজ্ব মৌসুমে টিকিট বুকিং প্রদানের সময় এজেন্সীগুলোর নিকট থেকে টিকিটের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ সাপেক্ষ্যে বাংলাদেশ বিমানের টিকিট প্রদান করার পরামর্শ দেয়া হয়।
কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, কামরুল আশরাফ খান, রওশন আরা মান্নান এবং বেগম সাবিহা নাহার সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভায় বাংলাদেশ বিমানের লীজকৃত উড়োজাহাজ দীর্ঘদিন ধরে গ্রাউন্ডেড থাকার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত সাব-কমিটির থেকে চিহ্নিত করা অনিয়মগুলোর সম্পর্কে মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করা হয়।এছাড়া চলতি হজ মৌসুমের হজ্ব ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন অগ্রগতি এবং সম্প্রতিককালে হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে সংগঠিত অগ্নিকান্ডের কারণ,এব্যাপারে গৃহীত পদক্ষেপ ও বিমানবন্দর সমূহে বিদ্যমান অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থার উপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।কমিটি বাংলাদেশ বিমানের লীজকৃত উড়োজাহাজ দীর্ঘদিন ধরে গ্রাউন্ডেড থাকার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত সাব-কমিটির উল্লেখিত অনিয়মগুলোর বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রদানের সুপারিশ করে। সোনারগাঁও হোটেলের সংস্কারের বিষয়ে সকল কাজের বিস্তারিত বিবরণসহ একটি প্রতিবেদন কমিটির পরবর্তী বৈঠকে প্রদানের বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয় ।
বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান,পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব, বাংলাদেশ বিমানের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকসহ মন্ত্রণালয় ও সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।