যাদের ভিসা হয়েছে তারা শেষ মুর্হূতেও হজে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছে হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।ব্যাংকিং সেবা, ভিসা সমস্যা সমাধানে যা যা করণীয় শেষ মুর্তূতে হলেও তা সমাধান করতে তারা বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন হাবের মহাসচিব শাহাদত হোসেন তসলিম।বেশ কয়েকটি হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় থানায় সাধারণ ডাইরি করা হয়েছে বলে জানান তারা।রোববার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৪টি ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের ৯টি ফ্লাইট ছেড়ে যাবার কথাও জানায় হজ কর্তৃপক্ষ।হজ ফ্লাইট বাতিলে হজ এজেন্সি হাবের কোনো দায় ছিল না বলে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন হাবের মহাসচিব।ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনা ও প্রশিক্ষণের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ তোলেন হাবের মহাসচিব।

নানা ভোগান্তির পর শেষ মুর্হূতে নড়েচড়ে বসেছে হজ কর্তৃপক্ষ। হজের জন্য যারা বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে টাকা জমা দিয়েছেন তাদের বিভিন্ন অভিযোগ প্রথমে আমল নেয়নি এজেন্সিগুলো।ভিসা প্রসেসিং, মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধির কারণে নিদির্ষ্ট তারিখে হজে যেতে পারেননি অনেকে। যাত্রীর স্বল্পতায় বেশ কয়েকবার হজ ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান বাংলামেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স। শেষ মুর্হূতে এসে হজ কর্তৃপক্ষ বলছে যে সব যাত্রী এখনো যেতে পারেননি তারা ২৮ আগস্টের মধ্যেই বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে পারবেন তারা।হজ যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে আগে থেকে কোনো ব্যবস্থা কেন নেয়া হয়নি এমন প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর দিতে পারেনি হাবের মহাসচিব।তবে যে সব হজ এজেন্সির অনিয়মের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি হয়েছে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তারা।আর সংবাদ সম্মেলন ডেকে হাবের মহাসচিব জানিয়েছেন,হজ যাত্রীদের সহায়তায় তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।হজ ফ্লাইট বাতিল এবং অন্যান্য ব্যাপারে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে, হজ নীতিমালায় আমূল পরিবর্তন আনা হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন। তিনি বলেন, আমাদের এখন প্রধান লক্ষ্য, সব হাজিকেই সৌদি আরবে পাঠানো। ইতোমধ্যে হজযাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। কোনও যাত্রী যদি প্রতারিত হন, তবে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। হজ কার্যক্রম শেষে অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রবিবার বিকেলে রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বজলুল হক হারুন বলেন, দেশে এত হজ এজন্সির প্রয়োজন আছে কিনা, সেটি মূল্যায়নের সময় এখন এসেছে। আমি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করব। এছাড়া, হজ কার্যক্রমে মধ্যস্বত্বভোগী কারা আছেন, কাদের মাধ্যমে হাজিরা টাকা দিচ্ছেন, তাদের তালিকা মন্ত্রণালয় ও হাবের কাছে থাকতে হবে। এসব বিষয় নজরদারিতে রাখলে আর ঝামেলায় পড়তে হবে না।হজ কার্যক্রমের সংশি¬ষ্ট ব্যাংক প্রসঙ্গে বজলুল হক হারুন বলেন, ‘আগের বছরগুলোর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা নিয়ম করেছিলাম, উড়োজাহাজ ভাড়ার টাকা এজেন্সির কাছে থাকবে না, ব্যাংকে জমা হবে। কিছু ব্যাংকের এ বিষয়ে গাফলতি ছিল, আমরা সমাধান করেছি। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক অনিয়ম করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এদিকে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম অভিযোগ করেন,ধর্ম মন্ত্রণালয় হজযাত্রী প্রতি ৩০০ টাকা প্রশিক্ষণের জন্য নেয়। এ বছর এই খাতে ৩ কোটি ৮০ লাখ নিয়েছে। বিনিময়ে কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা হজে যান, তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যে ৩০০ টাকা নেওয়া হয়েছে, তা ফান্ডেই আছে অপচয় হয়নি। আর যারা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাচ্ছেন, তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া কথা। আগামীতে এ বিষয়ে আমরা আরও বেশি সর্তক থাকব। এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের করা উচিত।