ভোলার লালমোহনে যৌতুকের দাবীতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে অমানষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভোলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে মামলা কারায় বিপাকে পড়েছে ওই গৃহবধূ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকির ধামকির অভিযোগ তুলে বিচার দাবী করে ভোলায় সংবাদ সম্মেলন করে গৃহবধূ ও তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য গৃহবধূ রুমা বেগম অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালে লালমোহন উপজেলা চরভূতা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে আবুল কাশেমের মেয়ে রুমা (২২) এর সাথে লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের আ. হাই এর ছেলে লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফ হোসেন এর সাথে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পরে মেয়ের সুখের কথা ভেবে নগদ টাকা সহ বিভিন্ন আসবাব পত্র দেন আরিফকে। তার কিছু দিন পর মোটরসাইকেল কিনে দিতে স্ত্রী রুমাকে মারধর করলে বাধ্য হয়ে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে একটি মোটরসাইকেল ক্রয় করে দেন রুমার বাবা। বিয়ের চার বছরের মধ্য রুমার দুইটি কণ্যা সন্তান হয়। আরিফ মাদদ সেবন ও জুয়া আসক্ত হয়ে গভির রাতে বাড়িতে এসে বিভিন্ন সময় রুমার কাছে যৌতুক দাবি করেন রুমাকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করতো আরিফ। বর্তমানে রুমা ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, গত ১৪ জুলাই শুক্রবার সকালে রুমার কাছে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে আরিফ ও তার পরিবার। টাকা দিতে অস্বীকার করায় অন্তঃসত্ত্বা রুমাকে লাথি ও ইট দিয়ে মারাত্মক রক্তাত জখম করে ফেলে রাখে আরিফ ও তার পরিবার। এই খবর শুনে রুমার পরিবার এসে তাকে উদ্ধার করে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট ভোলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে স্বামী সহ ৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন রুমা। মামলা তুলে নিতে রুমাকে গুম ও হত্যা সহ বিভিন্ন ভাবে হুমকির ধামকি দিচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন রুমা।

তিনি আরো জানান, বিয়ের সময় আরিফ প্রতারণা করে পূর্বের চারটি বিয়ের কথা গোপন রেখে তাকে বিয়ে করেন। পড়া লেখায় কোন একাডেমিক সার্টিফিকেট না থাকলেও আরিফ এই ইউনিয়নের বর্তমান ছাত্রলীগ সভাপতি। সভাপতি হওয়ার পর থেকে একের পর অনিয় করে যাচ্ছে সে। এক সময় আরিফ চট্টগ্রামে তামাক পাতা শুকানোর কাজে থাকা কালীন সেখানে প্রথম বিয়ে করে কিছু দিন পরে স্ত্রী রেখে পালিয়ে আসেন। কাজের সন্ধানে আবার নেয়াখালী গেলে সেখানেও বিয়ে করে কিছু দিন পর চলে আসেন এবং নিজ এলাকার নতুন বাজার আরজু ও শাহনাজ নামের আরো দুইটি বিয়ে করেন বলে জানান স্ত্রী রুমা বেগম। এর পর থেকে এলাকায় নানা অপর্কমের সাথে জড়িয়ে পরেন আরিফ।

২০১৬ সালে যমুনা টেলিভিশন থ্রি সিক্সটি ডিগ্রির অপরাধ মূলক প্রতিবেদনে লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের কল্লা কাঁটা বাহিনী নামের একটি প্রতিবেদনে আরিফকে কল্লা কাঁটা বাহিনীর অন্যতম সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়।এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরিফ বলেন, আমার স্ত্রীর সাথে আমার কোন বিরোধ নেই এবং যে সকল অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তা সত্য নয়। বিবাহীত কেউ ছাত্রলীগের পদে থাকতে পারে কিনা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জাকির বিশ্বসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এব্যাপারে এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন মহোদয়ের সাথে আলাপ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।