কলাপাড়ার মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুরে দীর্ঘবছর ধরে বসবাস করে আসছে রোহিঙ্গারা। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অফিসের তথ্যানুসারে ৭৪টি পরিবারকে রোহিঙ্গা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর দমনপীড়নে বিভিন্ন সময় মহিপুর-আলীপুরে বসবাসকৃত রোহিঙ্গাদের পরিচিত স্বজনরা কক্সবাজার উখিয়া টেকনাফ থেকে এখানে যাতায়াত করছে বলে একাধিক সুত্র দাবি করেছে। ইতোপুর্বে তালিকাভুক্তরা তাদের স্থানীয় গডফাদারদের সহায়তায় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।

কয়েকমাস আগে শাহাবুদ্দিন নামের এক রোহিঙ্গা কিছুদিন আলীপুরে একটি ফিশিং বোটে কাজ করার পরে জলদস্যু অপহরন করেছে এমন গুজব ছড়িয়ে গাঢাকা দিয়েছে। এসব রোহিঙ্গা পরিবারের সন্তানরা এখানে স্কুলে লেখাপড়াসহ তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করে আসছেন। তবে অভিযোগ রয়েছে মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ কাজের সঙ্গে এরা জড়িত রয়েছে। একাধিক সুত্রে জানা গেছে, অতিসম্প্রতি সরকারিভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের চার জেলার ৩০টি উপজেলাকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় ঝুঁকিপুর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা থাকা সত্ত্বেও কলাপাড়া উপজেলাকে এর আওতায় আনা হয়নি। বিশেষ নজরদারিতেও রাখা হয়নি। ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই সুযোগে বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার ধান্ধায় কেউ কেউ চেষ্ট চালাচ্ছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। আগামি ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে এ লক্ষ্যে কলাপাড়ায় ছবি তোলার কাজ শুরু হবে। শেষ হবে ২৯ সেপ্টেম্বর। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ জানান, এই এলাকা রোহিঙ্গাদের অবস্থান রয়েছে তা তিনি জানেন না। বিষয়টি তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানান। ইতোপুর্বে কলাপাড়ায় স্থায়ীভাবে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গারা শতকরা ৯০ ভাগ ট্রলারের জেলে হিসেবে কাজ করছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর কক্সবাজার, টেকনাফ, উখিয়াসহ বৃহত্তর চিটাগং অঞ্চলের শত শত মাছ ধরার ট্রলার কলাপাড়ার আলীপুর-মহিপুর এলাকায় অবস্থান করে সাগরবক্ষে মাছ শিকার করে। রোহিঙ্গাদের প্রথমে আশ্রয় দেয়ার সুযোগে এক শ্রেণির ট্রলার মালিকরা শুধুমাত্র দুবেলা পেটের যোগান দিয়ে কাজে লাগায়। আবার ধান্ধাবাজরা বিভিন্ন ধরনের অপরাধপ্রবণ কাজের সঙ্গে লাগিয়ে দেয়। কেননা এতে রাজি না থাকলে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখানো হয়। তাই যাতে কলাপাড়ার মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িত জেলেগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িয়ে কোন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যেন নতুন করে আস্তানা না গাড়তে পারে এজন্য মহিপুর থানা পুলিশ সচেষ্ট আছেন বলে ওসি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন। তবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আশঙ্কায় ঝুকিপুর্ণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিতের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি কলাপাড়ার নির্বাহী অফিসার এবিএম সাদিকুর রহমান। কিন্তু স্থানীয় পুলিশসহ গোয়েন্দা প্রশাসনকে বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া রয়েছে বলে এই কর্মকর্তা জানালেন।