আওয়ামী লীগই পরিকল্পিতভাবে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।বৃহস্পতিবার দুপুরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ওলামাদল আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।রিজভী বলেন, চাপ সৃষ্টি করতে এবং দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেনেড হামলার দায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর চাপাচ্ছেন।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পক্ষে যারা কথা বলেছেন বিভিন্ন মহল থেকে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। ওই রায়ের কারণে সরকার দিশেহারা হয়ে পড়েছে দাবি করে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতিকে মানসিক অসুস্থ বলে অন্য কোনো ধরনের অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এগোয় কি না, সেটা আজকে মানুষের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে।
তাকে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সরিয়ে, এটা অজুহাত সৃষ্টি করে যে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ তাকে আর রাখা যাবে না- এই বলে কোনো উদ্যোগ তারা গ্রহণ করে কি না, সেই আলোচনা হচ্ছে।
সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদে আছে- প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রধান বিচারপতি তাহার দায়িত্বপালনে অসমর্থ বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে ক্ষেত্রমত অন্য কোনো ব্যক্তি অনুরূপ পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা প্রধান বিচারপতি স্বীয় কার্যভার পুনরায় গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারকের মধ্যে যিনি কর্মে প্রবীণতম, তিনি অনুরূপ কার্যভার পালন করিবেন।বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফেরত নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন আনা হয়েছিল, যা সর্বোচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে এনেছে।জিয়াউর রহমান আমলে প্রতিষ্ঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার এই রায়কে ঐতিহাসিক বলছে বিএনপি। রায় বদলাতে সরকার বিচার বিভাগকে চাপ দিচ্ছে বলেও তাদের অভিযোগ।
অন্যদিকে এই রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি সিনহা বাংলাদেশের রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।এই পর্যবেক্ষণে ‘বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ ও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে’ অভিযোগ তুলে রায়ে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারি দলের নেতারা কড়া সমালোচনা করছেন, বাক আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি সিনহাও।প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের নেতা ফজলে নূর তাপস অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের পদত্যাগ করা উচিৎ বলেও মন্তব্য করেন।ওই প্রসঙ্গ ধরে রিজভী বলেন, পরিস্থিতি এমনই যে, তাদের একজন খাস মানুষের পদত্যাগ চাইলেন তিনি। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা জেলে গেলে এই অ্যাটর্নি জেনারেলই তাদের কারাগারে আটকিয়ে রাখার জন্য সর্বশেষ চেষ্টা করেন।এত অনুগত অ্যাটর্নি জেনারেল আর কখনও আসেননি। হায় তারই পদত্যাগ চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংসদ। এই ফজলে নূর তাপসরা একদিন হয়ত প্রধানমন্ত্রীরও পদত্যাগ চেয়ে বসবেন।