প্রায় এক সপ্তাহ আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভোলা সদর হাসপাতালের দোতলায় গাইনি বিভাগের সামনে রোগীর বিছানায় দেখা গেছে একটি বিড়াল ঘুমিয়ে রয়েছে। জানতে চাওয়া হলে হাসপাতালের সেবিকা-কর্মচারী, রোগী ও রোগীর স্বজনরা জানান, প্রায় প্রতিদিনই এ হাসপাতালে রোগীর বিছানায় বিড়াল ঘুমিয়ে থাকে। তারা আরো জানান, শুধু বিড়াল নয়, কখনো কখনো কুকুর ও ছাগলকেও দেখা যায় রোগীর বিছানায় কিংবা বিছানার নীচে। দেখে মনে হচ্ছে যেন এটি মানুষের হাসপাতাল নয়, পশুর হাসপাতাল। সম্প্রতি ভোলা সদর হাসপাতালে কুকুর, বিড়াল ও ছাগলের উপদ্রব বেড়েছে বলেও জানান হাসপাতালের সেবিকা-কর্মচারী, রোগী ও রোগীর স্বজনরা।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেশ কয়েকজন ফেসবুক ব্যবহারকারি ভোলা সদর হাসপাতালের বিছানায় কুকুর-বিড়াল ও ছাগলের পোষ্ট দিলে শুরু হয় তোলপাড়। গত রবিবার সকালে এ নিয়ে জেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব এ বিষয়টি উত্থাপন করে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ রথীন্দ্রনাথ মজুমদার হাসপাতাল থেকে কুকুর, বিড়াল ও ছাগল তাড়ানোর আশ্বাষ দেন। তিনি বিড়াল ধরার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করেছেন। এর অংশ হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভোলা সদর হাসপাতাল থেকে পশু তাড়ানোর অভিযান শুরু করে। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালের ভেতর থেকে অন্তত ১০-১২টি ছাগল ধরে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। হাসপাতালের স্টাফ কবির হোসেন জানান, হাসপাতালে সম্প্রতি কুকুর, বিড়াল ও ছাগলের উৎপাত বেড়েছে। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল থেকে এসব তাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি আরো জানান, গত এক সপ্তাহে এ হাসপাতাল থেকে বহু বিড়াল ও ছাগল আটক করা হয়েছে। ভোলা সদর হাসপাতালকে এখন পশুমুক্ত করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ রথীন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, ভোলা সদর হাসপাতালকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে কুকুর, বিড়াল ও ছাগল তাড়ানোর অভিযান শুরু করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিড়াল তাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যে আমার স্টাফদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিড়াল ধরতে বিড়াল প্রতি ২০টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। অনেক বিড়াল ধরাও হয়েছে। সেগুলো হাসপাতাল থেকে অন্তত ১০ কিলোমিটার দূরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতাল থেকে অন্তত ১৭টি ছাগল ধরা হয়েছে। পরে অবশ্য ছাগলগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের আশ-পাশে কোন ছাগল যেন না দেখা যায় সেজন্য সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে। ভোলা সদর হাসপাতালটি এখন পশুমুক্ত করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান সিভিল সার্জন।