বৃহস্পতিবার ১৭ আগস্ট । বিগত ১২ বছর আগে জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশের ৬৩টি জেলার ৫০০টি পয়েন্টে এই সিরিজ বোমা হামলা চালায়।দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলায় দায়েরকৃত ৯৩টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এতে ৩৩৪ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং বাকি ৫৬টি মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে। এসব মামলায় মোট আসামীর সংখ্যা ৪শ’ জন।
জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশের ৬৩টি জেলার ৫০০টি পয়েন্টে এই সিরিজ বোমা হামলা চালায়। এতে দু’জন নিহত এবং বোমার স্প্রিন্টারের আঘাতে প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়।২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ ছাড়া দেশব্যপী ৬৩টি জেলায় সংঘটিত এই সিরিজ বোমা হামলায় মোট ১৫৯টি মামলা দায়ের করা হয় । সিরিজ বোমা হামলা মামলার অগ্রগতির সম্পর্কে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক আজ এক সাক্ষাৎকারে জানান, সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ১৫৯টি মামলা হয়েছে।আইজিপি বলেন,১৫৯টি মামলার মধ্যে ১৪৯টি মামলার ১১০৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয়া হয়েছে। বাকী ১০ মামলায় চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।তিনি বলেন, এই পর্যন্ত ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার ২৭জন আসামীকে অপর জঙ্গি সংশ্লিষ্ট মামলায় ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
পুলিশ প্রধান বলেন, ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ জেএমবি’র শীর্ষ নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, তার সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, সামরিক কমান্ডার আতাউর রহমান সানি, সহযোগী আব্দুল আউয়াল, খালেদ সাইফুল্লাহ ও সালাউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর জেএমবি’র কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে জঙ্গি তামীম চৌধুরী দেশে ফিরে এসে নতুন করে জেএমবিকে সংঘটিত করে। এর নাম দেয় নিউ জেএমবি।
একেএম শহীদুল হক বলেন, নিউ জেএমবি সদস্যরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে কিন্তু পুলিশ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সফলতার সাথে তাদের দমন করতে সক্ষম হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে জেএমবি ও নব্য জেএমবি সম্পর্কে আইজিপি বলেন, নব্য জেএমবি’র সদস্যরা তুলনামূলকভাবে বোমা বানাতে বেশি দক্ষ এবং তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারেও পরিপক্ক। তারা এই মাধ্যম ব্যবহার করে ইসলামিক স্টেটের মতো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। কিš‘ জেএমবি বোমা বিশেষজ্ঞের সংখ্যা কমে গেছে। কারণ তাদের অনেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে অথবা নিহত হয়েছে।এদিকে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু বাসসকে জানান, ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলায় মোট ১৮টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ৪টি মামলার বিচার নিষ্পত্তি হয়েছে। ৫টি মামলা বিচারাধীন আছে এবং বাকি ৯টি মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। ৪টি বিচার নিষ্পত্তিকৃত মামলায় ৩৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি হলো ১০ বছর।