বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড পাওয়া এ এইচ এম বি নূর চৌধুরীকে ফেরত দিতে কানাডা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বাংলাদেশে কানাডার হাই কমিশনার বিনোয়েত পিয়েরে লারামি রোববার শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে গেলে তার মাধ্যমে এ আহ্বান জানান বাংলাদেশের সরকারপ্রধান।পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

পঁচাত্তরের পর পালিয়ে যাওয়া নূর চৌধুরী কানাডার টরন্টোতে রয়েছেন। সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলতে ফেরত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল মৃত্যুদ-বিরোধী কানাডা।তবে গত বছর শেখ হাসিনা কানাডা সফরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে নূর চৌধুরীকে ফেরতের বিষয়ে আলোচনা করেন। সে সময় এ বিষয়ে অটোয়ার সুর নরম হয়। কোন প্রক্রিয়ায় নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানো হবে, তা খুঁজতে একমত হয় কানাডা সরকার।ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী কানাডার হাই কমিশনারকে বলেছেন, একজন খুনি কানাডায় আছে; নূর চৌধুরী, তাকে ফেরত পাঠান।জবাবে কানাডার রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ পৌঁছে দেবেন।নূর চৌধুরী ছাড়া বাংলাদেশের জাতির জনক হত্যাকা-ে মৃত্যুদ-ের রায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন আরও পাঁচজন। এরা হলেন- আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি কার্যকর হয়। তারা হলেন- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমদ (আর্টিলারি), বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিন (ল্যান্সার)।

এছাড়া পলাতক আজিজ পাশা ২০০১ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা যান বলে পুলিশ জানিয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কানাডার বিদায়ী হাই কমিশনারের সাক্ষাতে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়েও আলোচনা হয়।প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, তারা সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়।এসময় স্বচ্ছ ভোটবাক্স চালুসহ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উদ্যোগ ও অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ এর ১৫ অগাস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর ২১ বছর দেশে গণতন্ত্র ছিল না। তার সরকারই মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।ইহসানুল করিম বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটা কোয়ালিশন সরকার গঠন করার কথা বলেছিলাম। বিএনপিকে বলেছিলাম যে, তারা যে মন্ত্রণালয় চায়; তা দেওয়া হবে ।বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে জনসচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।বাংলাদেশে দায়িত্বপালনকালে প্রধানমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন কানাডার হাই কমিশনার। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন তিনি।দুই দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার হচ্ছে বলে মন্তব্য করে হাই কমিশনার বলেন, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।