বন্যার কারণে খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে খাদ্য মজুদ করছে সরকারÑ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের প্রথম সভায় তিনি এ কথা বলেন।জনগণ যাতে খাদ্য সমস্যায় না পড়ে সেজন্য খাদ্য আমদানি করে হলেও মজুদের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
জাতীয় পুষ্টি পরিষদের প্রথম বৈঠকে তিনি বলেন, তার সরকার দেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এখন পুষ্টি নিশ্চিত করাই প্রধান লক্ষ্য।পুষ্টির সাথে অনেক কিছু সম্পৃক্ত। খাদ্যাভ্যাস উন্নত করতে হবে এবং সময়মতো খেতে হবে।পুষ্টির বিষয়ে গ্রামাঞ্চলে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যেন সুষম খাদ্য পায়।বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রপতি হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল ‘বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ‘ গঠনের আদেশ জারি করেন।১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরের বছর প্রথম জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। প্রায় ২০ বছর পর ২০১৫ সালে সরকার জাতীয় পুষ্টি নীতি অনুমোদন করে।
এই নীতি প্রণয়নের সাথে সাথে তা বাস্তবায়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে ২০১৬ সালের শুরুতেই দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়।বৈঠকে শুরুতেই বঙ্গবন্ধুকে স্মারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা যে শুধু স্বাধীনতাই দিয়ে গেছেন, তা নয়। তিনি সব কিছু দিয়ে গেছেন। নয় মাসে সংবিধান দিয়ে গেছেন।একটি প্রদেশকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় উন্নীত করে জাতির পিতা আমাদের সব কিছুই দিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, যে উন্নয়নটা সাড়ে তিন বছরে জাতির পিতা করেছিলেন.. ১৫ অগাস্টের পর বাংলাদেশ আর সামনের দিকে এগোতে পারে নাই।১৫ অগাস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল; তারা দেশটাকে পরনির্ভরশীল করে রাখতে চেয়েছিল।প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে পারা যাবে, তখনই পুষ্টি পূরণ করতে পারা যাবে।আওয়ামী লীগ যখন বরাবরই আগের সরকারে কাছে থেকে খাদ্য ঘাটতি পেয়েছে বলে জানান তিনি।১৯৯৬ সালের বিএনপি যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করে, তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৪০ লাখ মেট্রিক টন। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালের আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখনও দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৩০ লাখ মেট্রিক টন।
এবছর আগাম বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ধারণা, আবার বন্যা আসতে পারে। ব্যাপক বন্যা যদি হয়, তাহলে আমাদের খাদ্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে।মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য.. এই সমস্যা যাতে দেখা না দেয়..ইতিমধ্যে আমরা খাদ্য বাইরে থেকে ক্রয় করে মজুদ রাখার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।