নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার হাইকোর্টের রায় ঘোষিত হবে আগামীকাল রবিবার (১৩ আগস্ট)। বিচারপতি ভবানী প্রসাদসিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন। এর আগে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে গত ২৬ জুলাই। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মো. আহসান উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরোয়ার কাজল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্ব-পরিকল্পিত। এর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত। তাই এই মামলার রায়ের মধ্যে দিয়ে যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা ফিরে আসে।’
এর আগে গত ২২ মে সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত নুর হোসেনসহ আসামিদের নিয়মিত ও জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। গত ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নুর হোসেন, তারেক সাঈদসহ আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ। পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম। ঘটনার একদিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন সাত খুন মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ ২৬জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। বাকি নয় আসামির সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।