ভেনেজুয়েলার একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলার পর অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ১০ বিদ্রোহীর খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। ২০ জন লোক দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ভ্যালেন্সিয়ায় হামলাটি চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন মাদুরো, খবর বিবিসির।রোববার ভোরেরাতের ওই হামলার ঘটনায় দুইজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, সামরিক বাহিনীর পোশাক পরা ব্যক্তিরা বলছেন তারা ‘মাদুরোর স্বৈরাশাসনের’ বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন।এ ঘটনা সত্বেও ভেনেজুয়েলার সার্বিক পরিস্থিতি আপাত শান্তই রয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই ‘তাৎক্ষণিক পদক্ষেপেহামলা নস্যাৎ করায় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাদুরো।ঘটনাটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ অভিহিত করে ‘বিদেশি ভাড়াটে সৈন্যরা’ হামলাটি চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। যারা পালিয়ে গেছে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ধরতে জোর তল্লাশি শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা তাদের ধরবো।

ভ্যালেন্সিয়া শহর ও এর আশপাশের সড়কগুলোতে সামরিক বাহিনীর গাড়িগুলো টহল দিচ্ছে এবং তল্লাশি অভিযানে অন্তত একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।ভেনেজুয়েলা সরকার জানিয়েছে, এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের মধ্যে সেনাবাহিনীর এক ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট রয়েছেন যিনি সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। অন্যান্যরা সামরিক উর্দি পরা বেসামরিক লোক। যুক্তরাষ্ট্র ও কলম্বিয়ায় অবস্থানরত সরকারি-বিরোধী নেতারা এসব লোকজনের পেছনে আছেন বলে দাবি করেছেন মাদুরো।‘অভ্যুত্থানের’ সমর্থনে ভ্যালেন্সিয়ায় কিছু বিক্ষোভ দেখা গেলেও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে সেগুলোকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এর বাইরে সারা দেশের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।এপ্রিল থেকে ভেনেজুয়েলাজুড়ে শুরু হওয়া সহিংস সরকার বিরোধী বিক্ষোভে এ পর্যন্ত শতাধিক লোক নিহত হয়েছেন। তেলসমৃদ্ধ দেশ হওয়া সত্বেও ভেনেজুয়েলায় তীব্র খাদ্য ও অষুধ সঙ্কট চলছে, মুদ্রাস্ফীতি ৭০০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।এসব সত্বেও এই সময়ের মধ্যে দেশটির সেনাবাহিনী বেশ কয়েকবার প্রেসিডেন্ট মাদুরোর প্রতি ‘শর্তহীন আনুগত্য’ প্রকাশ করেছে। শনিবার দেশটির নতুন সাংবিধানিক গণপরিষদ প্রথম অধিবেশনে বসার একদিন পর ভ্যালেন্সিয়ার ঘটনাটি ঘটল। এই সাংবিধানিক গণপরিষদকে বামপন্থি প্রেসিডেন্ট মাদুরোর ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পন্থা হিসেবে দেখছে দেশটির বিরোধীদল।কিন্তু এই গণপরিষদই দেশটিতে শান্তি কায়েম করতে পারবে বলে বারবার দাবি করে আসছেন প্রেসিডেন্ট মাদুরো।