সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বক্তব্যকে তার ব্যক্তিগত মত বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবাদুল কাদের। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করুন।আওয়ামী লীগ থেকে বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন,দলীয়ভাবে আমরা বিষটি নিয়ে ঠান্ডা মাথায় ভাবছি। ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আমাদের মত পরে জানানো হবে।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে মেট্টোরেল বিষয়ক এক চুক্তি সই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী এ কথা বলেন।সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন,‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ যেখানে স্বাধীন সেখানে ন্যায় বিচার নিয়ে সন্দেহ কোথায়? খালেদা জিয়ার ন্যায় বিচার হবে কি হবে না এ নিয়ে অহেতুক সন্দেহ কেন? কারণটা কি?সম্প্রতি সিলেটে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সর্বোচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করলেও আবারও সেটা সংসদ পাস করা হবে।
বিচারপতি অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সর্বোচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করলেও আবারও সেই সংশোধন করা হবে বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।মুহিত বলেন, এটা আমরা অ্যাসেম্বলিতে আবার পাস করব.. এই আইনটা। এই কন্সটিটিউশনাল অ্যামেন্ডমেন্টটা আমরা আবার পাস করব এবং অনবরত করতে থাকব। দেখি জুডিসিয়ারি কতদূর যায়।বিকজ, জুডিসিয়ারির পজিশন আমার মতে আনটিনেবল (অন্যায্য)। মানুষের প্রতিনিধিদের উপর তারা খোদকারি করবে? তাদের আমরা চাকরি দেই।উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব সংসদে পাস হয়, যা ষোড়শ সংশোধনী হিসেবে পরিচিত।সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবীর এক রিট আবেদনে হাই কোর্ট ২০১৬ সালে সংবিধানের ওই সংশোধনী ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে। গত ৩ জুলাই আপিল বিভাগেও ওই রায় বহাল থাকে, যার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়।সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায়ের ফলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা আবারও জাতীয় সংসদ থেকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে যাচ্ছে।বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতেই রাখা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু আমলে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের পর বিচারক অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়।পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় গিয়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধন এনে বিচারক অপসারণের বিষয় নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করেন।সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী আদালত অবৈধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনলেও তাতে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের বিধানে কোনো পরিবর্তন আসেনি।