অবিলম্বে রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেওয়ার পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে শাহবাগ থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ের দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেয় বলে শিক্ষার্থীদের ভাষ্য।এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া সাতটি সরকারি কলেজের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী।পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি) আজিমুল হক বলেন, সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিলে প্রথমে তাদেরকে কিছুক্ষণ পরে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরে তারা রাস্তা বন্ধ করে যাতায়াতে বিঘœ ঘটাচ্ছিল। পরে আমরা তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য হয়েছি। এ ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।গত ফেব্র“য়ারিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল ইসলাম কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মিরপুর বাঙলা কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একই সেশনের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও এই ৭ কলেজের পরীক্ষা শুরু করতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে, শিক্ষার্তীরা মনে করছেন তারা পিছিয়ে পড়ছেন। এ জন্যই পরীক্ষার দাবিতে এ আন্দোলনে নেমেছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের আঘাতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জনের নাম পাওয়া গেছে। একজন ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র নাঈম এবং অন্যজন তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিক।শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, সকালে মানবন্ধন করার পর তারা কথা দিলো চলে যাবে, কিন্তু এক পর্যায়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তখন আমরা তাদের বাধা দিলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ফুলের টপ ও ইটপাটকেল ছোড়ে। পরে আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেই। তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং ১৩ জন ছাত্র আটক রয়েছে বলে জানান তিনি।
তাদের নামে মামলা করা হবে কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, আপাতত তাদের আটক রাখা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে ।শাহবাগ থানার পরিদর্শক জাফর আলী বিশ্বাস বলেন, ওরা মানববন্ধন শেষ করে জাতীয় জাদুঘর থেকে কাঁটাবনের দিকে যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করে। সেখান থেকে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, কিন্তু তারা মানববন্ধন শেষ করে যাওয়ার সময় কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে।এসময় আমরা টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে কয়েকজনকে আটক করি।মানববন্ধনকারীদের সমন্বয়ক দাবি করে আতিকুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সকাল ১০টা থেকে শাহবাগে জাদুঘরের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা মানববন্ধন কর্মসূচি শেষ করি।কাঁটাবনের দিকে যাওয়ার সময় আমাদের একটি গ্রুপ রাস্তা অবরোধ করে; কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।গত ফেব্র“য়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল ইসলাম কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মিরপুর বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে।