গাজীপুরে মুক্তিপণের দাবীতে অপহরনের চারদিন পর প্রবাসীর কন্যা এক শিশু ছাত্রীর বস্তাবন্দী অর্ধগলিত লাশ শুক্রবার উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহতের প্রাইভেট শিক্ষকসহ ৮জনকে আটক করেছে। নিহতের নাম বিথী আক্তার (সাড়ে ৫)। সে শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার নড়িয়া বাজার এলাকার বিল্লাল হোসেনের মেয়ে।

জয়দেবপুর থানার এসআই সাদেকুর রহমান, নিহতের মা নাসিমা ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের সিটি কর্পোরেশনের বোর্ডবাজারের বাদেকলমেশ্বর এলাকায় দুলালের তিনতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে বাবা-মার সঙ্গে একমাত্র সন্তান বিথীকে নিয়ে বিল্লালের স্ত্রী নাসিমা আক্তার ভাড়া থাকে। বিল্লাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় চাকুরি করে। বিথী স্থানীয় হোসেন আলী কিন্ডার গার্টেনের কেজি শ্রেণীর ছাত্রী। গত সোমবার বিকেলে বাসার পাশে খেলাধূলা করার সময় অপহরণকারীরা কৌশলে বিথীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে অপহরণকারীরা বিথীর পরিবারের কাছে মোবাইলে ফোন করে অপহরণের ঘটনা জানায় এবং প্রথমে চার লাখ ও পরে তিন লাখ এবং সর্বশেষে দু’লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। এদিকে বিথীর স্বজনরা গত তিনদিন ধরে এলাকায় মাইকিং করে ও বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও বিথী’র হদিস পায়নি। একপর্যায়ে এঘটনায় বিথীর নানা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশও বিভিন্নস্থানে তল্লাশী চালায়। খোঁজাখুঁজির একর্যায়ে শুক্রবার ভোর রাতে পঁচা দুর্গন্ধের সূত্র ধরে ওই বাড়ির বাইরে নীচতলার টয়লেটের সানসেটের উপরে রাখা প্লাস্টিকের বস্তায় বন্দি বিথীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহতের প্রাইভেট শিক্ষক অপুকেসহ ৮জনকে আটক করেছে।

জয়দেবপুর থানার এসআই সাদেকুর রহমান জানান, ধারণা করা হচ্ছে অপহরণের পরপরই বিথীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। পওে তার লাশ বস্তাবন্দি করে রান্নাঘরের বাইরে সানসেটের উপরে রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। নিহতের গলায়, বুকে ও পিঠে দাগ রয়েছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজ উদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

জয়দেবপুর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, পরকীয়া না-কি অন্য কোন কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহতের প্রাইভেট শিক্ষক অপুকেসহ ৮ জনকে আটক করেছে।