সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। রোববার দুপুর থেকে এ অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ শুক্রবার হামবুর্গে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে এক ঘোষণায় এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ‘রুশ, মার্কিন ও জর্ডানের বিশেষজ্ঞরা দারা, কুনেইত্রা ও সোয়েইদায় একটি নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তুলতে সমঝোতা স্মারকে সম্মত হন।’
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দামেস্কের স্থানীয় সময় ৯ জুলাই দুপুর থেকে এই অঞ্চলে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে।’
খবর এএফপি’র। হামবুর্গে চলা জি২০ সম্মেলনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন। এ সময়ে কথা বলার সময়ে তিনি এসব তথ্য জানান। এদিকে এটাই বিশ্বের ক্ষমতাধর দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি বৈঠক।
সম্প্রতি সিরীয় সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি গোলা লক্ষ্যচ্যূত হয়ে ইসরাইল অধিকৃত গোলান উপত্যাকায় আঘাত হানলে এর জবাবে ইসরাইল যেই স্থানগুলোতে হামলা চালায় চুক্তিতে সেই এলাকাগুলোকেও নিরাপদ অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া চলতি বছর যুদ্ধ-কবলিত দেশটিতে চারটি তথাকথিত নিরাপদ অঞ্চল গঠনে তুরস্ক ও ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসে। চলতি সপ্তাহে আস্তানা বৈঠকে এ ব্যাপারে তারা একটি সমঝোতায় আসতে ব্যর্থ হয়।
ল্যাভরভ বলেন, রুশ সামরিক পুলিশ রোববার শুরু হতে যাওয়া এই অস্ত্রবিরতি তদারকি করবে। জর্ডান ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তারা এ দায়িত্ব পালন করবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন চুক্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
টিলারসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ‘একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করবে, যা সিরীয় জনগণের ভবিষ্যত নিশ্চিত করবে।’২০১৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া ও পার্শ্ববর্তী ইরাকে আইএস জিহাদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে একটি বহুজাতিক জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এদিকে জর্ডানের সরকারি মুখপাত্র মোহাম্মদ মোমানি বলেন, ‘সিরীয় সরকারি বাহিনী ও তাদের পক্ষের সৈন্য এবং বিদ্রোহীরা যে ব্যাপারে একমত হয়েছে তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই একটি অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে।’
জর্ডানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মোমানির উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ‘ দেশ তিনটি জাতিসংঘ সমর্থিত জেনেভা ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৫৪ নম্বর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সিরীয় সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ সিরীয় যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২০ হাজারের বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যূত হয়েছে।