১৫ শতাংশ অভিন্ন ভ্যাট আরোপের নতুন আইনের কার্যকারিতা দুই বছর পেছানোয় ধন্যবাদ জানালেও স্বাধীন সংস্থা দিয়ে এটার প্রভাব পর্যালোচনা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই।শনিবার থেকে কার্যকর হওয়া নতুন অর্থ বছরের বাজেট নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাট আদায়ে হয়রানি বন্ধেরও দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের এই শীর্ষ সংগঠন।এ সময় তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইয়ের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিকেএমইএ-এর সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান, এফবিসিসিআই-এর সহ-সভাপতি মুনতাকিম আশরাফসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।লিখিত বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন দুই বছরের জন্য স্থগিত করায় এবং ব্যাংক আমানতের উপর প্রস্তাবিত আবগারি শুল্ক হ্রাস করায় দেশের সমগ্র বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

ভ্যাট আইন ২০১২ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেহেতু দুই বছর সময় সামনে থাকছে, সেহেতু এই আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বাধীন সংস্থা কর্তৃক ‘ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট’ (প্রভাব পর্যালোচনা) করা হোক। তারপর সংশোধন করে বাস্তবায়ন করা হোক। তৈরি পোশাক, চামড়া, হিমায়িত ও খাদ্যসহ সব ধরনের রপ্তানি আয়ে উৎসে কর কর্তনের হার ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৫০ শতাংশ করার আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও প্লাস্টিকের পাদুকা, হাতে তৈরি পাউরুটি ও বিস্কুটের ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়।

ভ্যাট আইনের প্রয়োগের নামে ব্যবসায়ীদেরকে হয়রানি করা হয়ে থাকে মন্তব্য করে শফিউল, আমরা আইন প্রয়োগের বিরুদ্ধে নই, তবে হয়রানির শিকার হতে চাই না।২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ নতুন অর্থবছর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা বলা হলেও বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ার শংকা ও নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের সমীকরণ মেলানোর চিন্তায় পিছু হটে সরকার।বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অনুরোধে’ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত তার অর্থবিলে সংশোধনী আনেন; ভ্যাট আইনের বাস্তবায়ন ঝুলে যায় অন্তত দুই বছরের জন্য।২০১২ সালের এই আইন গত বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকরের কথা থাকলেও তখনও ব্যবসায়ীদের প্রবল বিরোধিতায় একবছর পেছানো হয়।

প্রস্তাবিত বাজেটে বছরের যে কোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৮০০ টাকা আরোপের প্রস্তাব করা হয়।১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত স্থিতির ক্ষেত্রে ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি স্থিতিতে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আদায়ের প্রস্তাবও করেন মুহিত।
কিন্তু ব্যাপক সমালোচনার মুখে তুলনামূলক স্বল্প ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্কহার বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসে সরকার।এক লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে কোনো আবগারি শুল্ক না রাখতেই বলেন প্রধানমন্ত্রী; ১ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত তিনটি স্তর প্রস্তাব করেন তিনি। শেখ হাসিনা ১ লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ১৫০ টাকা এবং ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতে ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক কাটার প্রস্তাব করেন।

নতুন ভ্যাট আইন দুই বছর স্থগিত করার কারণে দেশীয় বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইন দুই বছর স্থগিত হওয়ায় রাজস্ব আদায়ে এর কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। বরং ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসবে।শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ভ্যাট আইনের প্রয়োগের নামে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়।’তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা আইন প্রয়োগের বিরুদ্ধে নই, তবে হয়রানির শিকার হতে চাই না। ব্যবসায়ীরা হয়রানিমূলক ভ্যাট-ট্যাক্স চান না। সেক্ষেত্রে এনবিআরের অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করতে হবে। এনবিআরের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে।এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন স্থগিতে রাজস্ব আয়ে প্রভাব পড়বে না। তবে রাজস্ব সংগ্রহে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে কর আদায়ের আওতা বাড়াতে হবে।’ভ্যাটের নতুন আইনের কার্যকারিতা দুই বছর পেছানোয় সরকারকে ধন্যবাদ জানালেও স্বাধীন সংস্থা দিয়ে এটার প্রভাব পর্যালোচনা করার আহ্বান জানান তিনি।লিখিত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন দুই বছরের জন্য স্থগিত করায় এবং ব্যাংক আমানতের ওপর প্রস্তাবিত আবগারি শুল্ক হ্রাস করায় দেশের সমগ্র বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে নতুন ভ্যাট আইন চলতি অর্থবছর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা বলা হলেও বুধবার (২৮ জুন) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত তার অর্থবিলে সংশোধনী আনেন। নতুন ভ্যাট আইনের বাস্তবায়ন দুই বছরের জন্য পিছিয়ে দেন।২০১২ সালের এই আইন গত বছরের ২০১৬ সালের জুলাই থেকে কার্যকরের কথা থাকলেও তখনও ব্যবসায়ীদের প্রবল বিরোধিতায় একবছর পেছানো হয়।