ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নে গত বছরের জুন মাসে গণভোট হওয়ার এক বছর পর, সোমবার বিচ্ছেদ প্রক্রিয়াবিষয়ক চূড়ান্ত আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে।ব্রাসেলসে ইইউর সদর দপ্তরে জোট ত্যাগের প্রক্রিয়ার জটিল বিষয়গুলো নিয়ে ব্রিটিশ ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস ও ইইউর পক্ষে মিশেল ব্রানিয়ার এই আলোচনায় অংশ নেবেন।১৯৭৩ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিলেও ৪৪ বছর পর ব্রিটিশ জনগণ গণভোটের মাধ্যমে এই জোট ত্যাগের পক্ষে রায় দেয়।
ব্রিটেনে গত বছর গণভোট হওয়ার পর গত ২৯ মার্চ ব্রাসেলসে জোটের বিধি অনুযায়ী থেরেসা মের সরকার জোট থেকে বের হয়ে যাওয়ার চিঠি দাখিল করেছিলেন। ইউরোপীয় জোটের নিয়ম অনুযায়ী, আগামী দুই বছর (২০১৯ সালের মার্চ) মধ্যে দুই পক্ষের দেনা-পাওনা মিটিয়ে ফেলতে হবে।সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া আলোচনায় আপাতত বিচ্ছেদবিষয়ক মূল কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে। জোটের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো সদস্য রাষ্ট্র জোট ছাড়ার ক্ষেত্রে ২০ হাজার শব্দের যে আইনবিষয়ক বিধি আছে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। যেমন: ইউরোপীয় ইউনিয়নে কর্মরত এক হাজার ৮০০ ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের পেনশনের দায়িত্ব কারা বহন করবেন; ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর নাগরিকদের অবস্থান এবং চাকরির বিষয়।
বর্তমান সময়ে ইউনিয়নভুক্ত সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রায় ৩২ লাখ নাগরিক যুক্তরাজ্যে, অন্যদিকে ১২ লাখ যুক্তরাজ্যের নাগরিক ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে বাস করছেন। এই নাগরিকদের বাস ও চাকরির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার আইনি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া ইউরোপীয় মুক্তবাজারে যুক্তরাজ্যের থাকা না-থাকা নিয়ে দর-কষাকষি হবে এবং উভয় পক্ষের লেনদেন নিয়ে কথা হবে।গত ৩১ মার্চ ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্কের সভাপতিত্বে সদস্য দেশগুলো ব্রাসেলসে ব্রেক্সিট নিয়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সমঝোতার খসড়া রূপরেখা অনুমোদন করতে একটি খসড়া প্রস্তুত করেছেন। ব্রেক্সিট-বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ৪৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলার ব্যাপারটিতে আগে উভয় পক্ষই শক্ত অবস্থান থেকে কথা বলেছে।