সরকার বছরের পর বছর ধরে অনেকটা লুকিয়েই আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক কেটে রাখছে। ব্যাংক গ্রাহকেরা এসব জেনেও কিছু করতে পারছেন না। মাশুল কাটা নিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগ থাকছে বছরজুড়েই। বিভিন্ন সময়ে বাজেটে আবগারি শুল্ক বাড়ানো হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র দুবার ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপের ঘোষণা বাজেটে উল্লেখ ছিল। বাজেটের বাইরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আলাদা করেও আবগারি শুল্ক বাড়ায়। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে আমানতকারীদের জানানো হয়নি।এই অবস্থায় সাবেক ব্যাংকার ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপ অনৈতিক ও বেআইনি। এমনকি তাঁরা ব্যাংক আমানতের ওপর সব ধরনের আবগারি শুল্ক তুলে দেওয়ার দাবি জানান।

১৯৯১ সালে ভ্যাট চালুর আগে আবগারি শুল্ক ও বিক্রয় কর ছিল রাজস্ব আয়ের একটি বড় উৎস। ১৯৯১ সালে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আইন চালুর পর আবগারি শুল্ক ক্রমান্বয়ে প্রায় সবই বাতিল করা হয়। রেখে দেওয়া হয় ব্যাংক আমানত ও বিমানের টিকিটের ওপর। ১৯৯১-৯২ অর্থবছরের বাজেটে সাইফুর রহমান ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতের ওপর ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক আরোপ করেন। এরপর থেকে ছয়বার এই শুল্কের পরিমাণ বাড়ানো হলেও কখনো বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়নি। ফলে আমানতকারীরা জানতেনই না এই শুল্কের কথা।বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এ নিয়ে বলেন,কর পরিশোধ করার পর বৈধ টাকা রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু রক্ষার পরিবর্তে আবগারি শুল্কের নামে জোর করে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রের এই অধিকার নেই, এটা অবৈধ, সংবিধানেরও পরিপন্থী। এটি বৈধ সম্পত্তি আত্মসাৎ করার মতো ঘটনাই। এটি অবশ্যই বেআইনি।

ইব্রাহিম খালেদ আরও বলেন, এত দিন বিষয়টি নজরে আসেনি। কারণ আগে হিসাবে টাকা থাকলে কিছু সুদ পাওয়া যেত। এখন সুদের হার কম, এই টাকা কাটা হলে আসল টাকাও কমে যাবে। তাই ব্যাংকের হিসাবের ওপর কোনো ধরনের আবগারি শুল্ক কাটা বৈধ হবে না।ব্যাংক আমানতের ওপর এভাবে আবগারি শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে নতুন অর্থবছরের বাজেট। আমানতের সুদের হার কমে যাওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষ আয় আরও কমে যাওয়ার শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন। নতুন বাজেট ক্ষুদ্র আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আমানতকারীদের একটি বড় অংশ গত তিন দিন আমানত থেকে অর্থ কেটে রাখা নিয়ে ব্যাংকে খোঁজখবর নিচ্ছেন। অনেকে অর্থ তুলে নেওয়ার কথাও বলেছেন। ব্যাংকে জমা রাখা অর্থ নিয়ে সবাই এখন চিন্তিত।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন অর্থবছরে আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক খাতে রাজস্ব আয় হবে মাত্র ৯২৫ কোটি ৭০ লাখ ৮২ হাজার ৭০০ টাকা। এই অর্থ মোট রাজস্ব আয়ের মাত্র দশমিক ৩১ শতাংশ। আর এই খাতের আয়ের মধ্যে ৫৮৪ কোটি টাকাই আসবে স্বল্প আমানতকারীদের কাছ থেকে। অর্থাৎ, ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে নতুন প্রস্তাব কার্যকর না করলে এই খাতে আদায় হবে প্রায় ৭১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আবগারি শুল্ক হার বৃদ্ধি করে সরকার বাড়তি আয় করবে ৩৫৬ কোটি টাকা।

সহিদ হোসেন, দ্বিতীয় প্রজন্মের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। বাজেট উপস্থাপনের পর কমপক্ষে ১৫ জন গ্রাহকের ফোন পেয়েছেন ব্যাংক হিসাবের ওপর প্রস্তাবিত আবগারি শুল্ক নিয়ে। সবারই বক্তব্য এক, ঘোষিত আবগারি শুল্ক কাটা হলে তাঁরা টাকা তুলে নেবেন। সুদের হার বাড়ানোরও দাবি জানিয়েছেন সবাই।পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করে সহিদ হোসেন বলেন, প্রস্তাবিত আবগারি শুল্ক নিয়ে আমানতকারীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। জমা টাকা নিয়ে সবাই চিন্তিত। কমে যায় কি না, এই আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। শাখায়ও আসছেন অনেকে।গত তিন দিন রাজধানীর মতিঝিলের সোনালী ব্যাংকের লোকাল শাখা, অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা, ইসলামী ব্যাংকের স্থানীয় শাখা, পূবালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় গিয়ে দেখা গেছে, নিয়মিত গ্রাহকদের পাশাপাশি অনিয়মিত গ্রাহকেরাও এসেছেন। তাঁদের সবাই জানতে এসেছেন, কবে থেকে অতিরিক্ত শুল্ক কাটা হবে, হিসাব থেকে আর কী কী মাশুল কাটা হবে।ব্যাংকগুলোতে বর্তমানে সুদের হার কমে দাঁড়িয়েছে গড়ে ৫ শতাংশ। সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। প্রতিবছর কাটা হবে হিসাব পরিচালনা মাশুল, এটিএম কার্ড ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং মাশুল। কোনো হিসাবে মুনাফা হলে এর ওপর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়।

আইএফআইসি ব্যাংকের এমডি শাহ আলম সারওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘোষণার পর ছোট গ্রাহকেরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন। এটা প্রত্যাহার করে নিলেই ভালো। এর মাধ্যমে যে অর্থ আসবে, তার চেয়ে বেশি সুনাম ক্ষুণœ হবে।পূবালী ব্যাংকের এমডি এম এ হালিম চৌধুরীও মনে করেন, সরকার বিষয়টা পুনর্বিবেচনা না করলে জনগণ কোথায় যাবে?ব্যাংক এশিয়ার এমডি আরফান আলী বলেন, কোনো পণ্যকে নিরুৎসাহিত করতে আবগারি শুল্ক দেওয়া হয়। ব্যাংক হিসাবে তো এ ধরনের শুল্ক হয় না। আমরা বিষয়টা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান প্রথম আলোকে বলেন, এ কারণে আমানতকারীরা ব্যাংকে টাকা রাখতে নিরুৎসাহিত হবেন। এতে আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।অর্থমন্ত্রীর বাজেট ঘোষণা অনুযায়ী, কোনো হিসাবে ১ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত থাকলে কাটা হবে ৮০০ টাকা। আর ১০ লাখ ১ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জমা বা উত্তোলন হলে কাটা হবে আড়াই হাজার টাকা, ১ কোটি ১ থেকে ৫ কোটি টাকা হিসাবে থাকলে কাটা হবে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি হিসাব থেকে ২৫ হাজার টাকা কেটে রাখা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র বলছে, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে হিসাব রয়েছে ৮ কোটি ১৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৬টি। এসব হিসাবে জমা রয়েছে ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা।এর মধ্যে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থ আছে এমন হিসাবের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৯৬ লাখ। আর ১ লাখ ১ থেকে ১০ লাখ টাকা আছে এমন হিসাবের সংখ্যা ৭৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৬৯ টি। ১০ লাখ ১ থেকে ১ কোটি টাকা আছে এমন হিসাবের সংখ্যা ৯ লাখ ৬২ হাজার, ১ কোটি ১ থেকে ৫ কোটি টাকা হিসাবের সংখ্যা ৫১ হাজার ৭৮১টি এবং ৫ কোটি টাকার বেশি আছে এমন হিসাব ১৪ হাজার ১৬টি।

এদিকে, ব্যাংক হিসাবের ওপর আরোপিত বর্ধিত আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি এবার সরকারের এক মন্ত্রীর কাছ থেকে এল।বুধবার সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, সঞ্চয় এবং ফিক্সড ডিপোজিটের ওপর কর আরোপ করা ঠিক হবে না।সাধারণ মানুষ, স্বল্প বেতন পাওয়া মানুষ ব্যাংকে টাকা জমা রাখে। এখানে শুল্ক আরোপ করা ঠিক হবে না। নিম্ন আয়ের মানুষকে অব্যাহতি দিয়ে ধনাঢ্যদের ওপরে কর আরোপ করা হোক।

মোজাম্মেল হক বলেন, আমি কেবিনেটের সদস্য। কেবিনেটে এই বাজেট পাস হয়েছে। এর বিরুদ্ধে কথা বলা নৈতিকতা বিরোধী।তবে আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত।তাদের কথা বলতে হবে।সঞ্চয়পত্রের সুদ না কমানোরও দাবি জানান তিনি।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ১ জুন ঘোষিত বাজেটে ব্যাংক গ্রাহকদের ওপর বাড়তি হারে আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করার পর থেকেই এ নিয়ে আলোচনা চলছে।সেখানে বলা হয়েছে, বছরের যে কোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হবে।পাশাপাশি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী,ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরাও আবগারি শুল্ক বাড়ানোর এ সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক মনে করেছেন না। তারা বলছেন, শুল্ক বাড়লে লেনদেনের অবৈধ মাধ্যম উৎসাহিত হবে।জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলীয় কয়েকজন সাংসদও অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, এটাতো খামোখা কথা। এটা কোনো নতুন বিষয় নয়। আমরা বরং সীমা পরিবর্তন করেছি। এবার সীমা বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে কিছুটা রেটও বাড়ানো হয়েছে।বাজেটে এই বর্ধিত আবগারি শুল্কের সমালোচনার পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতের চরম অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে মঙ্গলবার এক ইফতার অনুষ্ঠান থেকে দাবি করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।তিনি বলেন, ২০১৬ সাল ছিল আওয়ামী লীগের ব্যাংক চুরির বছর। ব্যাংকের টাকা প্রতিনিয়ত চুরি করেছে, চুরি করতে করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চুরি করেছে, ব্যাংকের টাকা চুরি করে তারা পাচার করেছে।

বিএনপি নেত্রীর এ মন্তব্যের জবাবে সংসদে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, খালেদা জিয়া আর তার পুত্র যে কাজে পারদর্শী, সেই কথাই উনি বলবেন। কিন্তু কিভাবে চুরি হল সেটা বলতে পারেন নি। উনার মাথা খারাপ,উনাদের সময় ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট হত। আর এখন ৪ লাখ কোটি টাকার বাজেট হয়।দেশের উন্নয়নের খবর রাখে না বলেই খালেদা জিয়া ইচ্ছামতো কথা বলছেন।এসময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যত বধ্যভূমি আছে, যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ হয়েছে সব জায়গায় একই ধরনের স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে। সব মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ডিজাইনে করার প্রকল্প পাস হয়েছে। যাতে ১০০ বছর পরেও নতুন প্রজন্ম বুঝতে পারে এটা একটা মুক্তিযোদ্ধার কবর।পাকিস্তানি ও রাজাকারদের ঘৃণ্য কাজ স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য ঘৃণাস্তম্ভ করার পরিকল্পনাও রয়েছে, যাতে মানুষ ঘৃণা জানাতে পারে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করার জন্য প্রতি জেলা-উপজেলায় স্মৃতিস্তম্ভ করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।বুধবার প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা শুরু করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য দীপু মনি।আলোচনায় তিনি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলকে ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখার দাবি জানিয়ে বলেন, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে অনেক মধ্যবিত্ত সন্তান পড়ে। এই প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় আনলে একটা বৈষম্যের বিষয় এসে যেতে পারে। এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখা যেতে পারে।ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সেক্রেটারি অব স্টেট হিলারি ক্লিনটনের যোগসাজস তদন্তে দেশটির উদ্যোগ নিয়েও কথা বাংলাদেশের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।তিনি বলেন, ড. ইউনূসের বিষয়ে হিলারি ক্লিনটন কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল সে বিষয়ে তাদের সিনেট কমিটি তদন্ত করছে। পশ্চিমা বিশ্ব কিছু কিছু দেশে তাদের ডমিনেশন প্রতিষ্ঠার জন্য লোক খুঁজে বেড়ায়। আমাদের দেশে কিছু মানুষ বসে থাকে, তারা সেই তল্পিবাহক হবেন এবং দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেবেন। পশ্চিমা প্রভুদের তল্পিবাহকরা আর কেউ নয়, এরা নব্য মীরজাফর। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।