প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খুনি মোশতাক ও তার দোসর জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। জিয়া নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেন।আমি ও রেহানা দেশে ফিরতে চাইলে আমাদের বাধা দেয়া হয়।প্রধানমন্ত্রী বুধবার সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামালের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত আমাদের বিদেশের মাটিতেই পড়ে থাকতে হয়। খুনি জিয়া আমাকে ও আমার বোন শেখ রেহানাকে দেশে আসতে দেয়নি। সে সময় সমগ্র বাংলাদেশকেই কয়েদখানায় পরিণত করা হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসলে জিয়াউর রহমান বাধা দেয়ার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি। কারণ বাংলাদেশের জনগণ ও আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মীবাহিনী সব বাধা উপেক্ষা করে আমাকে দেশে ফিরিয়ে আনেন।তিনি বলেন, দেশে এসে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলে ওই বাড়িতে যেতে দেয়া হয়নি। পিতা-মাতা, ভাইদের জন্য একটু দোয়া করার সুযোগও দেয়া হয়নি। পুলিশ পাহারা ও গেটে তালা দিয়ে আমার আসার পথ রুদ্ধ করা হয়। আমি রাস্তার ওপরই বসে পড়ি এবং নেতাকর্মীদের নিয়ে মিলাদ ও দোয়া পড়ি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট শুধু যে ঘাতকরা হত্যাকান্ড করেছে তাই না, তারা বাড়িতে লুটপাটও করে। ১৯৮১ সালের ১২ জুন পর্যন্ত ওই বাড়িতে কোন মানুষকে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের একজন সাধারণ নাগরিকেরও অবাধে চলাচলের অধিকার থাকে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে আসার পর আমাকে ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮১ সালের ১২ জুন হঠাৎ করে এক ঘণ্টার নোটিশে বাড়িটি আমাকে তাড়াহুড়ো করে হস্তান্তর করা হয়। খুনি, ষড়যন্ত্রকারীরা জনমানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আর আমি ও আমার বোন শেখ রেহানাও এর ব্যতিক্রম ছিলাম না।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিতকল্পে উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার কার্যক্রম আরো জোরালোভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে।তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের নেয়া স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে এটা পরিচালনা করা হচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য বজলুল হক হারুনের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিদ্যুতের স্থাপিত ক্ষমতা ৪ গুণেরও অধিক বৃদ্ধি পেয়ে ২০০৯ সালের ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট থেকে ১৫ হাজার ৩৭৯ মেগাওয়াটে (ক্যাপটিভসহ) উন্নীত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১৮ হাজার ১৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৯৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে মোট ১১ হাজার ৩৬৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে।এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মোট ৪ হাজার ৯১৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে।শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে মোট ৬ হাজার ৪১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনাধীন রয়েছে।তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন পরিকল্পনাসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি হচ্ছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ৭৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮২টি নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে ৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ সুবিধা প্রাপ্ত জনগোষ্ঠী শতকরা ৪৭ জন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে শতকরা ৮০ ভাগে উন্নীত হয়েছে (নবায়নযোগ্য জ্বালাসিহ)।

শেখ হাসিনা বলেন, মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ২২০ কিলোওয়াট ঘন্টা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৪০৭ কিলোওয়াট ঘণ্টা দাঁড়িয়েছে (ক্যাপটিভসহ)।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ঘোষিত রূপকল্প ২০৩০’ কিভাবে কোন পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হবে, কিভাবে অর্থায়ন হবে, তা স্পষ্ট নয়।তিনি বলেন, আর এই রূপকল্প ২০৩০ এর অধিকাংশই বর্তমান সরকার পূরণ করেছে।প্রধানমন্ত্রী সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক, গণতান্ত্রিক উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে একটি রূপকল্প ২০৩০ ঘোষণা করেছেন বিএনপিচেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। রাষ্ট্র পরিচালনায় গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে কি কি বিষয় অগ্রাধিকার দিতে চান, তা উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন উপস্থাপিত রূপকল্পটিতে তারা ক্ষমতায় গেলে কি কি করা হবে তার দীর্ঘ ফর্দ দেয়া হলেও কিভাবে কোন পদ্ধতিতে এটা বাস্তবায়ন করা হবে, কিভাবে অর্থায়ন হবে, তা স্পষ্ট নয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা অনেকটা নির্বাচনী ইশতেহারের মতোই হয়ে গেছে। এই ইশতেহার বাস্তবায়ন করতে হলে তাদের আগে ক্ষমতায় যেতে হবে। শুধু তাই নয়, পার্লামেন্টারি পদ্ধতি ও গণভোট পদ্ধতির পরিবর্তনসহ আরও যেসব মৌল পরিবর্তন তারা আনতে চাচ্ছেন, তার জন্য তো সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের শাসনামলে অনিয়ম-দুর্নীতি, জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতার যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন, এরপর ক্ষমতার বাইরে থেকে জ্বালাও-পোড়াওসহ অনিয়মতান্ত্রিক তৎপরতা দিয়ে যে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি করেছেন তা কাটিয়ে উঠে এতটা জনআস্থা অর্জন তাদের জন্য যে কঠিন চ্যালেঞ্জ তা বলাই বাহুল্য।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে অবৈধভাবে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে নিজেই নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। এরপর বিএনপি নামে দল সৃষ্টি করে প্রতি রাতে কারফিউ দেয়। মার্শাল ল দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করে।খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশ পাঁচবার বিশ্বের দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। সাধারণ মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা এই মৌলিক অধিকার কোনটাই পূর্ণ করতে পারেনি। তবে জিয়ার পরিবার বাংলাদেশের জনগণের সম্পদ লুট করে সবচেয়ে ধনী পরিবার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিল।প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলা, সংসদ সদস্য হত্যাসহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে বিএনপি পারদর্শী তারা আবার জনগণকে কি আশার বাণী শোনাবে?শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত মেয়াদে রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করা হয়। এ রূপ ২০২১’কে সামনে রেখে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ‘২০১০-২১’ প্রণয়ন করা হয়। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০ প্রণয়ন করেছে, যা ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবরে এনইসি কর্তৃক অনুমোদন লাভ করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।তিনি বলেন, বিদ্যুতের বর্তমান উৎপাদন ১৫ হাজার মেগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা। এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রের পর্যায়ে উন্নীত করতে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টায় অর্জিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থারও নজর কেড়েছে।শেখ হাসিনা বলেন, জাপান এক্সটারনাল ট্রেড ওরগানাইজেশন (জেটরো)-এর মতে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দ্বিতীয় পছন্দের তালিকায় রয়েছে। এছাড়াও, প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারসের মতে, বাংলাদেশ ২০৫০ সালের মধ্যেই পরিণত হবে পৃথিবীর ২৩তম বৃহত্তর অর্থনীতিতে এবং পেছনে ফেলবে মালয়েশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াকে, যা আমাদেরকে অত্যন্ত উজ্জ্বীবিত করে।তিনি বলেন, রূপকল্প-২০২১ এর বাস্তব রূপান্তরের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে আগামী দিনের বাংলাদেশকে বিশ্বে অগ্রগামী ও উন্নত জনপদে পরিণত করতে সরকার জাতিকে এই মেয়াদের মধ্যেই রূপকল্প-২০৪১ উপহার দেয়া হবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদে’ শীর্ষক নির্বাচনী ইশতেহারে ২০১৪ তে দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বিশ্বের প্রথমসারির উন্নত দেশগুলোর সমপর্যায়ে উন্নীত করার রূপরেখা অঙ্কিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তরিকত ফেডারেশনের এম এ আউয়ালের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী ও সচিব ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে বিগত এপ্রিল মাসে ৩ দফা বৈঠক করেন।

তিনি বলেন, এসব বৈঠকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি, চাহিদা নির্ণয়, স্থানীয় উৎপাদন, মজুদ পরিস্থিতি, আমদানির পরিমাণ ইত্যাদি ধারাবাহিকভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং সেই অনুযায়ী প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য গঠিত ‘দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, টিসিবি এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে।

শেখ হাসিনা বলেন,এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ও সরবরাহ অবস্থা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এলসির তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকেও আমাদিন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এসব তথ্য পর্যালোচনা করে পণ্যভিত্তিক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।তিনি বলেন, পবিত্র রমজান উপলক্ষে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রয়ের লক্ষ্যে টিসিবি’র মাধ্যমে স্থানীয় বাজার থেকে ক্রয় এবং আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করে চিনি, ছোলা, সয়াবিন তেল ও খেজুর সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। চলতি বছর ১৫ মে থেকে সারাদেশে ১৮৫টি ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিটি কর্পোরেশন এবং জেলা পর্যায়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। এ টিমগুলো ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রয়োজনে জরিমানাসহ অন্যান্য শাস্তি আরোপ করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঢাকাসহ সকল মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। পবিত্র রমজান উপলক্ষে বাজার পরিদর্শনমূলক অভিযান জোরদার করা হয়েছে।তিনি বলেন, সারাদেশে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা চলমান রয়েছে। এ সকল মোবাইল কোর্ট অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতারোধে জরিমানা আরোপ করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী জননিরাপত্তা নিশ্চিত সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রমজান মাস ও ঈদ উপলক্ষে সড়ক, নৌ ও রেলপথ যানযাজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় বাস-লঞ্চ-ট্রেনে অধিক যাত্রী বেড়ে যায়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের চলাচল নির্বিঘœ করতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মহাসড়ক পথে যাতায়াত নিরাপদ করার লক্ষ্যে ২৯ দফা নির্দেশনা সংবলিত পত্র জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-মহাসড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কসমূহ যানজট মুক্ত রাখা, বাস টার্মিনালের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ভিজিলেন্স টিম গঠন, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং এবং যাত্রী উঠানামা বন্ধ করা, সিএনজি স্টেশন সার্বক্ষণিক চালু রাখা, ২২টি জাতীয় মহাসড়কে থ্রি-হুইলার বন্ধ রাখা, বিআরটিসি’র স্পেশাল ঈদ সার্ভিস, ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি, ঈদ উপলক্ষে ভিন্ন ভিন্ন দিনে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি বন্ধ দেয়া ও খোলা, বড় ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবেলায় হেলিকপ্টার ব্যবহরা করা, অনভিজ্ঞ গাড়ি চালক দ্বারা মহাসড়কে মোটরযান না চালানো এবং কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম স্থাপন।তিনি বলেন, এ সময় ভ্রমণ নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখার জন্য অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন, বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশীসহ জনবহুল এলাকায় সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি, স্থানীয় দুষ্কৃতিকারী বা ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও, যানজট নিরসনকল্পে বিভিন্ন সময় সভা, সেমিনার ইত্যাদিসহ মাইকিং করার মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।শেখ হাসিনা বলেন, রমজান মাসে জনগণের নিরাপত্তার জন্য বাজার, শপিং মল, বিপণি বিতান, মার্কেট, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চ টার্মিনালে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, বোমাবাজি, নাশকাতমূলক কর্মকান্ড প্রতিরোধসহ নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিবারাত্রি পুলিশি টহল এবং নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।তিনি বলেন, পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে জনগণ যাতে নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারে, সড়ক পথের যে সকল স্থানে যানজট সৃষ্টি হতে পারে এবং যে সকল স্থান যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী সে সকল স্থান মেরামত করার জন্য ইতোমধ্যে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।