বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলে সরকার জনগণকে লোডশেডিং উপহার দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্য্স্ত হয়ে পড়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীর মতো বড় বড় শহর-নগরে লোডশেডিং হচ্ছে দফায় দফায়।আওয়ামী লীগ সরকার শুরু থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলে জনগণের পকেট থেকে লক্ষ কোটি টাকা বের করে নিয়ে জনগণকে উপহার দেওয়া হয়েছে এই লোডশেডিং।

সারা দেশে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, জ্যৈষ্ঠের খরতাপে মানুষের যখন স্বস্তি দরকার তখন এই দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং সরকারের উন্নয়নের জলজ্যান্ত উদাহরণ।নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।পিডিবির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ২১ মে ৮ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ছিল ৮ হাজার ৮৩০ মেগাওয়াট। তার আগের দিন ২০ মে চাহিদা ছিল ৮ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট, উৎপাদন ছিল ৮ হাজার ৮১৯ মেগাওয়াট।

প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছেÑ জ্যৈষ্ঠের দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গরমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।দেশের প্রায় সব জায়গায়তেই একই অবস্থা। ফেনীর পরশুরামে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একজন।বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে তারা।এদিকে, প্রচন্ড তাপদাহের সঙ্গে যোগ হয়েছে অসহনীয় গুমটভাব। এ চিত্র পুরো দেশজুড়ে। গত কয়েকদিনের প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন বির্পযস্ত প্রায়। আরো কয়েকদিন এই তাপদাহ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে আরও তিন-চার বছর লাগবে বলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর উদ্ধৃতি দিয়ে রিজভী বলেন, দেখুন সরকারের প্রতিষ্ঠান পিডিবি বিদ্যুৎ নিয়ে দিচ্ছে এরকম তথ্য, আর প্রতিমন্ত্রী বলছেন ভিন্ন কথা। পিডিবি ডাহা মিথ্যাচার করছে, তারা জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে।তিনি বলেন, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ স্থাপন করে মূলত লুটপাটেরই সুযোগ দেয়া হয়েছে, আর কেটে নেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের পকেট। অনুন্নয়নের শরীরে প্রসাধনী মাখালেই উন্নয়ন হয় না। সেটি হয় ধাপ্পাবাজি। আওয়ামী সরকার সেই কাজটি করছে।দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রতিদিন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিএনপি কর্মীদের তুলে নিয়ে গ্রেপ্তার করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসিচিব।গত ২০ মে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির প্রতিবাদে বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতির বিষয়ে রিজভী বলেন, আমরা আশা করছি, সরকার আমাদেরকে অনুমতি দেবেন। দেখি আজকে তারা (পুলিশ ও গৃহায়ন অধিদপ্তর) কি সিদ্ধান্ত দেন। আমাদের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ সর্বাত্মক প্রস্ততি নিয়েছে, এই জনসভা সফল করতে।দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ ও সুলতানা আহমেদ এসময় উপস্থিত ছিলেন।