নর্থ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সাথে দেখা করতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! নর্থ কোরিয়ার সাথে সম্পর্কের ক্রমাবনতির মধ্যে, দেশটির উপর হামলার আশঙ্কার মধ্যেই এমন বক্তব্য দিলেন ট্রাম্প। ‘সঠিক পরিস্থিতিতে’ কিমের সাথে দেখা করতে পারলে ‘সম্মানিত’ বোধ করবেন বলে জানান তিনি। এর একদিন আগে কিমকে ‘যথেষ্ট বুদ্ধিমান’ বলে প্রশংসা করেছিলেন তিনি।
“যদি তার সাথে দেখা করাটা আমার জন্য যথাযথ হয়, তাহলে অবশ্যই আমি তা করবো। এটা করতে আমি সম্মানিত বোধ করবো।” সোমবার সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গকে এমনটি জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নর্থ কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চলমান অস্থিরতার মধ্যেই এমন মন্তব্য আসলো।
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর হোয়াইট হাউজ একটি বিবৃতিতে জানায়, এই দুই নেতার (ট্রাম্প-কিম) মধ্যে কোন ধরণের বৈঠক হওয়ার আগে নর্থ কোরিয়াকে অনেক শর্ত পূরণ করতে হবে। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সিন স্পাইসার বলেন, অবিলম্বে নর্থ কোরিয়ার উস্কানিমূলক আচরণের সমাপ্তি দেখতে চায় ওয়াশিংটন। স্পষ্টত এখন কোন শর্ত নেই বলেও যোগ করেন তিনি।
রোববারের সিবিএস’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নর্থ কোরিয়ার নেতার প্রশংসা করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘বেশ কঠিন লোকদের’ মোকাবেলা করে তরুণ বয়সেই কিম ক্ষমতা গ্রহণ করেন। কিমের মানসিক সুস্থতা নিয়েও এসময় সন্দেহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। নর্থ কোরীয় নেতা কিম ক্ষমতা গ্রহণের দু’বছর পরই তার চাচাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় সৎভাই কিম জং ন্যামের হত্যাও তার নির্দেশে হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এমন প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প বলেন, “লোকজন প্রশ্ন করে, সে (কিম) কি মানসিকভাবে সুস্থ? আমার কোন ধারণা নেই। যখন তার বাবা মারা যায় তখন সে ২৬-২৭ বছরের তরুণ। অবশ্যই বেশ কঠোর লোকজনকে নিয়ে তার চলতে হয়। বিশেষ করে জেনারেল এবং অন্যান্যরা।”
“এবং এতো কম বয়সে, সে ক্ষমতা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়। আমি নিশ্চিত যে অনেকেই এই ক্ষমতা কেড়ে নিতে চেয়েছিলো, সেটা তার চাচা বা অন্য কেউ হতে পারে। কিন্তু সেই (কিম) ক্ষমতাসীন হয়েছে। তাই অবশ্যই, সে একজন বেশ বুদ্ধিমান ব্যক্তি।”
শনিবার আবারও ব্যর্থ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় নর্থ কোরিয়া, দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের এই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয় বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্র ও সাউথ কোরিয়ার। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নর্থ কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েই যাচ্ছে, ষষ্ঠ পারমাণবিক পরীক্ষা চালানের হুমকিও দিয়েছে দেশটি।
ট্রাম্প সিবিএসকে জানায়, এমন পরীক্ষা আবার চালানো হলে যুক্তরাষ্ট্র খুশী হবে না। এর মানে কি সামরিক পদক্ষেপ? এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি জানিনা। দেখা যাক।”
সাম্প্রতিককালে এই অঞ্চলে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। নর্থ ও সাউথ কোরিয়ার সামরিক কার্যক্রমের কারণেই এই অঞ্চলে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে কোরিয় উপকূলে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে সাউথ কোরিয়ায় একটি বিতর্কিত ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কাজও শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
কিমকে নিয়ে সাম্প্রতিক ট্রাম্পের বক্তব্যে অনেকটা নমনীয় ভাব থাকলেও অপরপক্ষে এমনটা নেই। বরং তারা বেশ কঠোরভাবই বজায় রেখেছে। রবিবার নর্থ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তাদের বোকামিপূর্ণ সামরিক উস্কানির বিপর্যয়কর ফলাফল বিবেচনা করতে আহ্বান জানায়।