শক্রবার সন্ধ্যার দিকে বয়ে যাওয়া প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার ঝড়ে ও শিলাবৃষ্টিতে লালমনিরহাট, আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লণ্ডভণ্ড হয় চরাঞ্চলের গ্রামগুলো। এতে কয়েক হাজার হেক্টর আবাদি জমির ধান, ভুট্রা, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং শতশত ঘরবাড়ি ও গাছপালা নষ্ট হয়ে যায়। এসময় গাছ পড়ে বিভিন্ন স্থানে ১৫ জন আহত হন।  লালমনিরহাট- বড়িমারী মহসড়কে বড়বড় গাছ ও বিদ্যুতের পিলার উপড়ে পড়ায় যোগাযোগব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সরবাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভগে পড়েছে সাধারণ কৃষক, ছাত্রছাত্রী, পরিবহণ শ্রমিক ও দুরপাল্লার যাত্রীরা।

ঘূর্ণিঝড়ের সময় থেমে থেমে চলা শিলাবৃষ্টিতে উঠতি ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে যায়। অাধাপাকা ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড বেগে আঘাতহানা ঝড়ে জেলার আদিতমারী, কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। উপড়ে গেছে গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি ও তার। এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তিস্তার চরাঞ্চল গুলোতে।

আদিতারী উপজেলার মহিষখোচা এলাকার কৃষক মমিনুর রহমান জানান, তার গ্রামের অনেক ঘর ঝড়ে ভেঙে পড়েছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা। মহিষখোচা এলাকার কয়েজনের সঙ্গে কথা হলে তারা প্রতিবেদককে বলেন, চরাঞ্চলের এমন কোনো বাড়ি নেই ক্ষতি হয়নি। লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের গ্রামগুলো। তবে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে প্রাথমিক জানা যায়নি।

মহিষখোচা ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী জানান, এ ঝড়ে তার ইউনিয়নে অসংখ্য ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে। ঝড়ের কারণে গাছ ভেঙে পড়ে লালমিনহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় রাস্তা সচল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৫২ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষ হয়েছে। যা সবেমাত্র পাকা রং ধরেছে। কোনো এলাকায় ধান কাটাও শুরু হয়েছে। এমন অবস্থায় এ ঝড় আর শিলাবৃষ্টিতে ওইসব ক্ষেতের ধান শুয়ে পড়েছে মাটিতে।

লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক বিদ্যুৎ ভূষণ রায় বলেন, এ শিলাবৃষ্টি ধান ও ভুট্টাসহ সবজির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ক্ষতির পরিমাণ জানতে সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের তালিকা করতে বলা হয়েছে।