মুক্তিযোদ্ধা, আবৃত্তিশিল্পী ও স্থপতি কাজী আরিফ ক্লিনিক্যালি ডেড। তাকে গত বুধবার থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এদিকে এখনো যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মাউন্ট সেইন্ট লুকস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেনি। গত মঙ্গলবার এই হাসপাতালে দ্বিতীয় বারের মতো তার হৃদপিন্ডে অস্ত্রোপচার করা হয়।
কাজী আরিফের হার্টের বাল্ব অকেজো হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার বাল্ব পুনঃস্থাপন এবং ধমনীতে বাইপাস অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে নেওয়া হয়।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এএফএম আহকামউল্লাহ জানান, অস্ত্রোপচারের পর থেকেই কাজী আরিফের অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। তবে অপারেশনের আগে এই আবৃত্তিশিল্পী মানসিকভাবে বেশ শক্ত আছেন।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে তিনি আরও লিখেছেন ‘এই সেই কাজী আরিফ, ১৯৮৬ সালে বাংলা একাডেমীর বৈশাখী মেলা থেকে কিনেছিলাম যার প্রথম আবৃত্তির ক্যাসেট ‘প্রেমের কবিতা’। টিনএজ-এর শেষ বছরটিতে পা রেখে, তার আবৃত্তি শুনে প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম কবিতার। বাংলাদেশের সে সময়ের সব জনপ্রিয় কবিদের শ্রেষ্ঠ কবিতা দিয়ে সাজিয়েছিলেন অ্যালবাম, আর আবৃত্তি ছিল একেবারে আধুনিক যেন কথা বলছেন শ্রোতার সাথে, একান্ত হৃদয়ের কথা।’
১৯৫২ সালের ৩১ অক্টোবর ফরিদপুর রাজবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন কাজী আরিফ। কিন্তু বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রাম শহরে। এখানেই তার পড়াশোনা, রাজনীতি, শিল্প-সাহিত্য এসব কিছুরই হাতেখড়ি হয়। তিনি একাধারে একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, আবৃত্তিকার, লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক ছিলেন। ১৯৭১ সালে ১ নম্বর সেক্টরে মেজর রফিকের কমান্ডে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ শেষে বুয়েটে পড়াশোনা শুরু করেন। এর পাশাপাশি শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চাও চালিয়ে যান।