টানা বর্ষণের কারণে ভোলা ও শেরপুর, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জসহ সাতটি জেলার হাওরাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয় এখন সারা দেশেই প্রধান আলোচ্য বিষয়। অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হাওরে বোরোর কাঁচা ধান তলিয়ে গেছে। নতুন করে দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়। হুমকির মুখে পড়েছে হাওরের জীববৈচিত্র্য। দেশের বিভিন্ন এলাকায় আকস্মিক বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ। আর গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ, শিলাবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ, শেরপুর, হবিগঞ্জ, রৌমারী, লক্ষ্মীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আধাপাকা বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা।এদিকে, নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে এখনো তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বঙ্গোপসাগরে বায়ু চাপের তারতম্য বেশি থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।গভীর সাগরের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। দুইদিনের পূর্বাভাষে বলা হয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।এদিকে, ৩ দিনের টানা বর্ষণে ভোলায় কৃষকের রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফসল বিনষ্ট হওয়ার আশংকা করছেন কৃষকরা। ঋণ শোধ করা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, দ্রুত ফসল উত্তোলন এবং পরবর্তিতে আউশ আবাদের পরামর্শ দিলেও কিছুতেই নিম্নাঞ্চলের আকস্মিক বন্যার ক্ষতি পুশিয়ে উঠতে পারছেনা কৃষকরা।
এদিকে, প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতির মহিরশি নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে আশপাশের ১০টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে নতুন করে আরো এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে গত দুইদিন ধরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগেই বৃষ্টিপাত হয়েছে। এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পূর্বাভাস অনুযায়ী, সোমবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়। উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। ভারি বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, দিনাজপুরে রেকর্ড ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া বরিশালে ৭৬ মিলিমিটার, মাইজদীতে ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ২৩ মিলিমিটার। আবহাওয়া কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, সারা দেশে সোমবার পর্যন্ত কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনো ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারি বৃষ্টিপাত হতে পায়।ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের প্রায় প্রতিটি জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে। অন্য চারটি বিভাগেও কম-বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ভাঙাচোরা রাস্তায় পানি জমে চলাচলে মারাত্মক বিপত্তি তৈরি হয়েছে। যেসব রাস্তায় উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে সেখানে ভোগান্তির মাত্রা আরো বেড়েছে। শান্তিনগর, মালিবাগ ও মৌচাক এলাকা দিয়ে চলাচলকারী পথচারীদের দর্ভোগ ছিল সবচেয়ে বেশি।রাজধানীতে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ : সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, আরামবাগ, হাতিরঝিল, গে-ারিয়া ও কারওয়ান বাজার এলাকায় সড়কে পানি জমে গেছে। কোনো কোনো সড়কে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকায় যানবাহন চলাচলে জটলার তৈরি হয়। অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতার কারণে সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়ে যাত্রীরা। আবার উন্নয়নকাজের জন্য সড়কজুড়ে খোঁড়া গর্তের কারণে বিভিন্ন স্থানে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।রামপুরা থেকে কুড়িল বিশ্বরোডের প্রগতি সরণির সড়কটিতে পাইপ বসানোর কাজ চলছে। উত্তর বাড্ডা থেকে মধ্য বাড্ডা পর্যন্ত অর্ধেক রাস্তা খুঁড়ে রাখা হয়েছে। ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজে মালিবাগ লেভেলক্রসিং থেকে শান্তিনগর পর্যন্ত পুরো সড়ক অচল হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি জমে রাস্তার চিহ্নও নেই।
মগবাজার ৭৫ আউটার সার্কুলার রোডের বাসিন্দা শাহরিয়ার রহমান বলেন, সেঞ্চুরি মার্কেট থেকে মৌচাক মোড় পর্যন্ত পানি জমে খুব খারাপ অবস্থা। মৌচাক থেকে একটু এগিয়ে রেলগেটের দিকে যেতে সোহাগ পরিবহনের অফিসের সামনে বড় গর্তে পানি জমে ঢেউ খেলছে। বড় আকারের পরিবহনও এ রাস্তা দিয়ে পার হতে পারে না। পূর্ব গোড়ানের বাসিন্দা সাদেকা আক্তার বলেন, আমার মেয়েকে নিয়ে সকালে স্কুলে এসে দেখি পুরো শান্তিনগরে পানি আর পানি। বেইলী রোডের পানির জন্য হেঁটে যাওয়ার সুযোগ নেই। ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে রাখা হয়েছে। অনেকটা ভয় নিয়ে এ রাস্তাটিতে চলাচল করতে হচ্ছে। ’ মিরপুরের রূপনগর আবসিক এলাকার ২ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাড়ির মোস্তাফা বলেন, রাস্তায় ব্যাপক খোঁড়াখুঁড়ির ফলে কাদা জমে ঢেকে গেছে। আর বৃষ্টির পর বাসা থেকে বের হলেই দেখা যায় রাস্তায় ময়লা পানি জমে আছে। আর যেসব স্থানে আগে থেকে গর্ত ছিল সেখানে প্রায়ই রিকশা-ভ্যান উল্টে পড়ছে।বৃষ্টির কারণে রাজধানীতে নিম্ন আয়ের মানুষও বিপাকে পড়েছে। ভ্রাম্যমাণ ক্ষদ্র ব্যবসায়ীদেরও বেচাকেনা কমে গেছে। একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, ল তাঁদের ভ্রাম্যমাণ দোকাগুলোতে বিক্রি একেবারেই ছিল না।
হাওরের পানি দূষিত হয়ে পড়ায় মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর অস্বাভাবিক মড়ক দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় পানির গুণাগুণ নষ্ট হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে বিভিন্ন পর্যায়ের গবেষকদল। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও নদী কেন্দ্রের একটি দল এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আরেকটি দল ইতিমধ্যে একাধিক হাওর পরিদর্শন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধিদলও গতকাল শনিবার হাওরের পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। গবেষকরা বলছেন, অ্যামোনিয়া গ্যাস বৃদ্ধি এবং অক্সিজেন ও পিএইচ (ক্ষার ও অম্ল মাত্রা) অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় পানি প্রকৃতিগত দূষণেই মাছ ও পাখি মারা পড়ছে।
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, হাওরের মাছ পানি ও জলজ জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও গুণাগুণ নষ্ট হওয়া নিয়ে কাজ শুরু করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের একটি প্রতিনিধিদল। গতকাল সকালে দলটি দেখার হাওরের পানি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে। পরে টাঙ্গুয়ার হাওরে গিয়ে কাজ শুরু করে। হাওরের পানি দূষণের ঘটনা তদন্ত করতে আণবিক শক্তি কমিশনের একটি প্রতিনিধিদলও গতকাল সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়।ইতিমধ্যে একাধিক টিম হাওর পরিদর্শন করে জানিয়েছে, কাঁচা ধানের দুধেল থোরে ছিল পুষ্টিকর নানা উপাদান। সেই থোর পচে মাত্রাতিরিক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস সৃষ্টি হয়। অক্সিজেন ও পিএইচের মাত্রা অস্বাভাবিক কমে যায়। এ কারণেই শ্বাসকষ্টে মাছ মারা যাচ্ছে। মাছের এই মড়ক এবার মাছের প্রজনন মৌসুমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।এবার বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই নগরের লালখানবাজার এলাকার পাহাড় থেকে কিছু বসতি উচ্ছেদ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ভূমিধসের আশঙ্কা মাথায় রেখে জানমাল রক্ষায় জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন।দুপুরে চট্টগ্রামে ঝোড়ো বাতাসে অনেক স্থানে গাছপালা সড়কের ওপর ভেঙে পড়ে। এতে যানবাহন চলাচলেও বিঘœ ঘটে। বিদ্যুতের তার ও খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনেও বিঘœ সৃষ্টি হয়।
শেরপুরের আটটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত : শেরপুর প্রতিনিধি জানান, অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার আট ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত দুই দিনের অবিরাম বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতীর মহারশী ও সোমেশ্বর নদের দুই কূল উপচে ঝিনাইগাতী সদর, ধানশাইল, কাংশা, নলকুড়া, গৌরীপুরসহ অন্যান্য ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ঝিনাইগাতী-রাংটিয়া সড়কের ওপর দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে। এতে সাবরেজিস্ট্রি অফিস, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর ও পোস্ট অফিস চত্বর হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়। ঝিনাইগাতী উপজেলার ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম, কাংশা, গৌরীপুর ইউনিয়নের অনেক গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকার কাঁচাপাকা বাড়িঘরসহ আধাপাকা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের রাবার ড্যামসংলগ্ন সন্ন্যাসীভিটা এলাকায় নদীতীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ৭৫ ফুট ভেঙে গেছে। এ ভাঙন অংশ দিয়ে পাহাড়ি ঢল প্রবেশ করে পাশের উত্তর রানীগাঁও, দক্ষিণ রানীগাঁও ও গোল্লারপাড় গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এ তিনটি গ্রামের কৃষকদের পাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে।
বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কৃষকদের স্বপ্নভঙ্গ : হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, চলতি বছরে জেলার আটটি উপজেলায় প্রায় এক লাখ ১৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু গত তিন দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার গুঙ্গিয়াজুরি হাওর, গণকির হাওর, ভরগাঁও হাওর, কালুয়ার বিল, খাগাউড়া হাওরসহ অধিকাংশ জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এখানকার প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বন্যার আশঙ্কায় আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছে কৃষকরা।উঠতি বোরো পানির নিচে : রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, টানা বর্ষণে রাজীবপুর উপজেলার প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির উঠতি বোরো ধান ডুবে গেছে। উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের নয়াচর, তিনথোপাপাড়া, সন্ন্যাসীকান্দি, মধ্যেরচর, মদনপাড়া, চরনেওয়াজী এলাকার বোরো ক্ষেতে কোমর থেকে বুক পর্যন্ত পানি। কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। আবার অনেক স্থানে বাধ্য হয়ে কৃষকরা আধাপাকা ধান কাটছে।মাগুরা প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে আধাপাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে।
রবি ফসলের মাঠ পানির নিচে : লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুরে গত চার দিনের বৃষ্টিতে সয়াবিন, তরমুজ, মরিচ, বাদামসহ বিভিন্ন রবি ফসলের মাঠ ডুবে গেছে। জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ৯২ হাজার ৩৩৬ হেক্টর জমিতে রবি ফসলের আবাদ হয়। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে সয়াবিনের। পাঁচ উপজেলায় ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়। সয়াবিন সবে পাকতে শুরু করেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে কৃষকরা বৃষ্টির মুখে পড়ে। অসময়ে ভারি বর্ষণে কৃষকদের বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।লক্ষ্মীপুরে গত বুধবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে ভারি বর্ষণ হয়েছে। এতে রামগতি উপজেলার চরসীতা, চরবাদাম, আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চর আবদুল্লাহ, কমলনগর উপজেলার চরফলকন, চরজাঙ্গালিয়া, চরকালকিনি, চরমার্টিন, চরলরেন্স, চরকাদিরা, চরবসু, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবনীগঞ্জ, চরউভুতি, আবীরনগর, লাহারকান্দিচর রমনিমোহন এবং রায়পুর ও রামগঞ্জের বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চল এখন পানির নিচে। এতে আধাপাকা সয়াবিনের ছড়ায় পচন ধরেছে। বাদাম, মরচি ও তরজুমগাছ মরতে শুরু করেছে। কৃষকরা ফসল রক্ষায় সেচ দিয়েও পানি সরাতে পারছে না।কমলনগর উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ছালেহ উদ্দিন পলাশ জানান, ডুবে থাকা সয়াবিন ও তরমুজগাছ মরে যাবে। যতটুকু সম্ভব কৃষকদের পানি সরাতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।