স্বামীর চাহিদা মতো ৩ লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দিতে না পারায় স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সেলিনা বেগম (২০) নামের এক গৃহবধূ। সে এখন লালমনিরহাটের আদিতমারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শুক্রবার সকালে জেলা সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি গ্রামের আফসার আলীর ছেলে স্বামী এরশাদুল হক রানার বাড়িতে এ নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে। সেলিনা উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের মোক্তার আলীর মেয়ে। তিনি লালমনিরহাট সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

নির্যাতনের শিকার সেলিনা বেগম জানান, ২ বছর পূর্বে এরশাদুল হক রানার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে নগদ দেড় লাখ টাকা ও কিছু আসবাবপত্র দেয়া হয় তার পরিবার। রানা আরএফএল কোম্পানির সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং পদে চাকরির করেন। সেই সুবাদে তারা বিয়ের পর দিনাজপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। আর সেখানে আরো ৩লাখ টাকা যৌতুকের জন্য শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। যৌতুক দিতে না পারলে মেয়েটিকে ডিভোর্স দেয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকেন রানা। এরপর সেখান থেকে শ্বশুর বাড়ি চলে এলে সেখানেও একই কারণে নির্যাতন করা হতো বলে মেয়েটি অভিযোগ করেন।

এদিকে গত শুক্রবার সকাল থেকে যৌতুকের জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে রানা মেয়েটিকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা চালায়। স্বামীর অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেরে সন্ধ্যার সময় স্বামীর বাড়ি থেকে কৌশলে বাবার বাড়িতে পালিয়ে আসেন সেলিনা। সেলিনার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে তার পরিবার চিকিৎসার জন্য রাতেই আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করান।

সেলিনার বাবা মোক্তার আলী জানান, যৌতুকের জন্য একটি মেয়েকে কোন অমানুষও এভাবে নির্মম নির্যাতন করতে পারে না। তিনি এ ঘটনায় আদালতে মামলা করবেন বলেও জানান। এ বিষয়ে জানতে এরশাদুল হক রানার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। আদিতমারী হাসপাতালে চিকিৎসক আব্দুস সালাম শেখ জানান, মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুস্থ হয়ে উঠতে তার অনেক সময় লাগবে। আদিতমারী থানার ওসি হরেশ্বর রায় বলেন, ঘটনাটি শুনেছি অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।