নিজের একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী হয়েও অপর প্রতিবন্ধী ও অনাথ শিশুদের জন্য মন কাদে মাসুমের। সদাসর্বদা চেষ্টা করেন, তাদের জন্য কিছু একটা করার। একসময়ে নিজে কষ্টের মাঝে থাকলে অন্য প্রতিবন্ধী ও অনাথ শিশুদের জন্য অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছে অনেক কিছুই। হয়েছেন জীবন যুদ্ধে জয়ী। সামান্য পুজি নিয়ে ব্যবসাবাণিজ্য শুরু করলে আজকে সে কোটি প্রতি। সরকারের সহযোগীতা পেলে গড়ে তুলতে চান, প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি।

প্রতিবন্ধী হওয়ায় পড়াশুনা করতে না পারলেও ব্যবসায় উদ্যমী হয়ে লালমনিরহাট শহরের বিডিআর হাট এলাকার মাসুম পারভেজ সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। শুধু ব্যবসায় সফলতা নিয়ে আসেননি, সমাজসেবা ও সমাজে কল্যাণমুলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন সদাসর্বদা। আর সৃষ্টি করেছেন বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্ম সংস্থান। তবে ব্যাংক ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে সুদের চাপে তাকে অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে।

পা দুইটিই কর্মক্ষম তাই এভাবেই ক্রেসের উপর ভর করেই চলতে হয় মাসুম পারভেজকে। শারিরীক প্রতিবন্ধীর প্রতিবন্ধকতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি, পারেনি সমাজের বোঝা করে রাখতে। জীবন সংগ্রাম মঞ্চে সংগ্রামী মাসুম পারভেজ প্রতিবন্ধীর সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজের সফলতাকে। আজ তিনি সফল ব্যবসায়ী হয়ে সকলের বাছে পরিচিত। সার, কীটনাশক, সিমেন্ট আর পরিবহন ব্যবসায় করেছেন বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান। প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্কুলে ভর্তি হয়েও পড়াশুনা থেকে ছিটকে পড়েন মাসুম পারভেজ। বাবা মোক্তার হোসেনের সাথে সার কীটনাশকের ব্যবসায় মনোযোগী হোন।

১৯৯৬ সালে বাবার নামে সার ডিলারশিপ লাইসেন্স আর ৩৮ হাজার টাকার সার কীটনাশক নিয়ে একটি টিনশেড ঘরে পুর্ণাঙ্গভাবে ব্যবসায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেন তিনি। কিছু বছর পরে যুক্ত করেন সিমেন্ট ও পরিবহনের ব্যবসা। আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিকে টিনশেড ঘর থেকে তিনতলা বিশিষ্ঠ বিশাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রুপ দেন। ক্ষুদ্র ব্যবসাকে আজ ৫ কোটি টাকার ব্যবসায় পরিনত করেছেন তিনি। প্রতিদিন সংগ্রাম করে সংগ্রামী শারিরীক প্রতিবন্ধী মাসুম পারভেজ হয়ে উঠেছেন সফলতার অনুকরন। সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠার পাশাপাশি শারিরীক প্রতিবন্ধী মাসুম পারভেজ নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন সমাজসেবা ও কল্যাণমুলক নানা কাজে। সাধ্যমতো সহযোগিতা করে আসছেন প্রতিবন্ধী ও অনাথ শিশুদের।

সমাজের হতদরিদ্র মানুষজনকে দিচ্ছেন সহযোগিতা। গড়ে তুলেছেন মাদ্রাসা। অনুদান দিয়ে আসছেন মসজিদ মন্দির ও গীর্জার উন্নয়নে। কিন্তু ব্যাংক ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে গিয়ে সুদের ভাড়ে হিমশিম খেতে হয় সংগ্রামী এই শারিরীক প্রতিবন্ধী মাসুমকে।
সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় সুদমুক্ত অখবা স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা পেলে তার ব্যবসাকে বেগবান করতে পারবেন। আর বাস্তবায়ন হবে প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসন ও তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার স্বপ্ন। শারিরীক প্রতিবন্ধী মাসুম পারভেজ প্রতিবন্ধীদের জন্য তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন এমনটিই প্রত্যাশা করছেন লালমনিরহাটের ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষ।