বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি বলেছেন,ভারত থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা হচ্ছে। এতে কম মূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে এবং উৎপাদনে বড়ধরণের খরচ প্রয়োজন হবে না।তিনি বলেন,আগামী দুই বছরের মধ্যে ভারত থেকে আরো দুইহাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনার প্রস্তুতি চলছে।প্রতিমন্ত্রী রোববার দুপুরে সিলেট নগরীতে ‘টেকসই জ¦ালানী প্রসারে গ্রিন ব্যাংকিং এর ভূমিকা’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
জার্মান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জিআইজেড), বাংলাদেশ সরকারের সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি (¯্রডো) এবং বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।নসরুল হামিদ বলেন,‘সরকার মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ভারত থেকে ৬০ মেগাওয়াট বিদুৎ আনা হয়েছে। সামনে আরও দুই হাজার মেগাওয়াট আনা হবে এবং তা দুই বছরের মধ্যেই হবে। এ বিদ্যুতে দাম নির্ধারণ হবে দুদেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে।সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, যার মধ্যে চারটি চুক্তিপত্র অনুষ্ঠানে বিনিময় হয়।অনুষ্ঠানে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী বাংলাদেশকে আরও ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘোষণা দেন। দেশের সব মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ২০১৮ সালে একশ ভাগ বিদ্যুতায়ন করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।
সরকারের গৃহীত গ্রিন ব্যাংকিং নীতিমালা ও বিভিন্ন কার্যক্রমের সাফল্য নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের উপযোগী অবকাঠামো তৈরির জন্য এ ধরনের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন সহায়ক অবকাঠামো তৈরি শুধু টেকসই জ্বালানি উন্নয়নের জন্য নয়, বরং সামগ্রিক পরিবেশ উন্নয়ন ও টেকসই অর্থনীতির দিকে দেশের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি মনে করেন। সৌরবিদ্যুতের চাহিদা দিন দিন কমছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এজন্য সৌরবিদ্যুতের চাহিদা কমছে।সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ পাওয়ায় মানুষ এখন সৌরবিদ্যুৎ নিতে চাইছে না। তবে যেসব এলাকায় গ্রিড লাইন যাবে না সেসব এলাকায় সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে আলোকিত করা হবে।
পটুয়াখালিসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। মানুষের চাহিদা মেটাতে বিদ্যুত উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। বিদেশ থেকে কম মূল্যে বিদ্যুৎ আমদানিও করছে সরকার।ভুটান ও নেপালের ৪০ হাজার মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে’এ কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ দুটো দেশ প্রতি ইউনিট মাত্র দু‘টাকা মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে এবং দেশ দু’টি ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে সক্ষম। তাই তারা ইতিমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে গেছে। আরো দশ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে পারলে খুব সহজেই উন্নত দেশে পরিণত হবে।এ দেশ দুটো থেকে বিদ্যুৎ আনার চেষ্টা চলছে এ কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন,ভূটান ও নেপাল সরকার ইতিমধ্যে সম্মত হয়েছে। তাদের সেখানে ইনভেস্ট করে বিদ্যুৎ নিয়ে আসার চিন্তাভাবনা চলছে।শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণাভিত্তিক নয় এ কথা উল্লেখ করে জ¦ালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে এনার্জি রিসার্চ কাউন্সিল’ একটি সংস্থা গঠন করেছে। গবেষণার মাধ্যমে কোথায় কিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন টেকসই ও সাশ্রয়ী হবে সে দিকনির্দেশনা আমরা এই সংস্থার মাধ্যমে পাবো ।বিআইবিএম এর মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ¯্রডোর চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর এস কে সুর চৌধুরী, বাংলাদেশে জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মাইকেল শুলথেই, সিলেটের এডিএম আমিনুর রহমান।