যুক্তরাষ্ট্রকে সিরিয়া সরকারের ওপর আর হামলা না চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে মস্কোয় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।বুধবার দুই কূটনীতিক এ বৈঠকে বসেন। সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্নায়ুযুদ্ধ যুগের দুই শত্র“দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্কে নতুন করে অবনতির প্রেক্ষাপটে এ বৈঠকটি কন্টকাকীর্ণ হবে বলেই মনে করা হচ্ছিল। সেরকম একটি উত্তপ্ত আবহেই দুজনের আলোচনা শুরু হয়েছে এদিন।
সিরিয়ার ইদলিবে বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত খান শেইখৌন শহরে রাসায়নিক হামলার জবাবে সিরীয় বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রেক্ষাপটে দুপক্ষের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। পশ্চিমারা রাসায়নিক হামলার জন্য সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে দায়ী করলেও রাশিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, সিরিয়া সরকার এ হামলা চালায়নি। সিরিয়ার বিমানঘাঁটিতে হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র রেড লাইন অতিক্রম করেছে বলেও রাশিয়া অভিযোগ করেছে।বুধবারের বৈঠকে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ল্যাভরভ বলেন, সিরিয়ায় হামলা নিয়ে আমরা খবুই উদ্বেগজনক কর্মকান্ড লক্ষ্য করেছি। এ ধরনের কর্মকান্ড আর না ঘটাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই আমরা বিশ্বাস করি। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদকে উৎখাত করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিশ্র বার্তারও সমালোচনা করেন ল্যাভরভ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও সিরিয়া নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও বক্তব্য না দেওয়ায় এ বিষয়ে দেশটির অবস্থান কি তা এখনও অস্পষ্ট। সিরিয়া নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস, জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন একেকজন একেক কথা বলেছেন।জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি প্রথমে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাত করা যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার নয় বলার পর আবারও পরে এক বক্তব্যে এ বিষয়টিকেই যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার বলে উল্লেখ করেন। অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস কে পরাজিত করাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অগ্রাধিকার। আর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদকে তার দেশের জনগণই উৎখাত করবে এটিই শুধু তিনি আশা করেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসও টিলারসনের মতো আইএস কে পরাজিত করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম লক্ষ্য বলে উল্লেখ করলেও তিনি বলেন, আসাদ সরকারের নিজ জনগণের ওপর আর কোনও রাসায়নিক হামলা যুক্তরাষ্ট্র সহ্য করবে না।রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ বুধবারের বৈঠকে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সিরিয়া নিয়ে পাওয়া এ সমস্ত অস্পষ্ট বার্তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছেন।এর জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসনও বেশ খানিকটা কুটনীতির সুরে বলেছেন, দুপক্ষের অভিন্ন স্বার্থ, অভিন্ন লক্ষ্যের বিষয়গুলো তিনি স্পষ্টভাবে তুলে ধরার আশা রাখেন। একইসঙ্গে দুপক্ষের তীব্র মতবিরোধের বিষয়গুলোও তিনি স্পষ্ট করতে চান যাতে করে দু দেশই আরও ভালভাবে এ বিরোধগুলোর কারণ বুঝতে পারে এবং তা দূর করার উপায় খুঁজতে পারে।